ভারতকে ২২ বছর পর হারানোর স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। শেখ মোরসালিনের গোলে অধরা জয়টা ধরা দিয়েছে জামাল ভূঁইয়া-হামজা চৌধুরীদের হাতে। তবে ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচ যে আর দশটা সাধারণ ম্যাচ ছিল না, তা আর বলতে! একাধিকবার ম্যাচে এর ছাপ দেখা গেছে।
ম্যাচের আগে জামাল ভূঁইয়া জানিয়ে রেখেছিলেন, এই ম্যাচে প্রতিটা ইঞ্চির জন্য লড়বেন। সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন ভারতের ফুটবলার ব্রেন্ডন ফের্নান্দেজকে ট্যাকলের ভিডিওটাও। তাতেই প্রচ্ছন্ন বার্তা ছিল যেন, ‘ছেড়ে কথা বলব না, ছেড়ে কথা বলবে না আমার দল’।
সে বার্তা সমর্থকদের মাঝেও সংক্রমিত হলো। শেষ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ফুটবল দলের ম্যাচ মানে লাল-সবুজের জোয়ার ওঠে স্টেডিয়ামে। দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ডার্বি ম্যাচে তার শ্রেষ্ঠ অধ্যায়টাই যেন দেখা গেছে।
এখানেই শেষ নয়। জুলাই আন্দোলনের বিখ্যাত স্লোগান, ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা! ঢাকা!!’ শোনা গেছে ক্ষণে ক্ষণে।
তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে গ্যালারিতে এক টিফো। যেখানে লেখা ছিল, ‘তিস্তা থেকে ফেলানী, আর কত পাঞ্জেরী?’ দুই দেশের উষ্ণ সম্পর্কের সময়ে সীমান্তে লাশ পড়েছে একের পর এক, তৎকালীন সরকার তাতে বালির বাঁধটাও দিতে পারেনি। এমনকি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়েও হাপিত্যেশ বহুদিনের। সে ক্ষোভটাই যেন আজ ফুটে উঠল ফুটবল সমর্থকদের ব্যানার-টিফোয়।
ভারত এই লড়াইটা যে কোনো মূল্যে জিততে চেয়েছিল। প্রথম লেগের ঠিক আগে সুনীল ছেত্রীকে অবসর ভাঙিয়ে নিয়ে আসা, কিংবা এই লেগের ঠিক আগে ফিফার অনুমতি ছাড়াই রায়ান উইলিয়ামসকে ঢাকায় নিয়ে আসা… সব মিলিয়ে ভারতের মরিয়া রূপের দেখা মিলেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই লেগেই। এক গোলে পিছিয়ে পড়ে মেজাজ হারিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়েছে। ডার্বি ম্যাচ হবে, আর এসব হবে না, তা কী করে হয়?
এতসব কিছুর পর বাংলাদেশ জয়শূন্য থেকে মাঠ ছাড়লে উৎসবটা যেন অপূর্ণই থেকে যেত। তবে হামজা-মোরসালিনরা সেসব হতে দেননি। বাংলাদেশ জয় তুলে নিয়েছে, প্রেক্ষাপটটা সেই জয়ের স্বাদ বাড়িয়ে দিয়েছে আরও বহুগুণে।



















