আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে জাতীয় পার্টির (জাপা) জি এম কাদের নেতৃত্বাধীন অংশ। দলটি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে প্রার্থী নির্বাচনের কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য রংপুরের শীর্ষ নেতাদের তিন দিন ধরে ঢাকায় ডেকে আলোচনা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি আসনের প্রার্থী ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানান দলের কো–চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা।
শনিবার রাতে জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দলটির নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেখানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সঙ্গে তাদের কথা হয়। জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার খবর নিতে আসায় বিএনপি নেতারা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক যোগাযোগ নিয়ে তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর জেলা আহ্বায়ক আজমল হোসেন জানান, রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের তালিকা তৈরি হচ্ছে। রংপুর–৩ থেকে নির্বাচন করবেন জি এম কাদের, আর গাইবান্ধা–১ থেকে লড়বেন মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে না পারলে বিকল্প পরিকল্পনাও বিবেচনায় আছে, তবে রংপুর অঞ্চলে নেতাকর্মীরা নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে আছেন।
রংপুর জেলার সদস্যসচিব আবদুর রাজ্জাক জানান, বিভাগে ছয়টির মধ্যে দুই আসনে নতুন প্রার্থী দেওয়া হবে। রংপুর–১ আসনে একজন জনপ্রিয় ব্যারিস্টারকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। আগে যেসব ২২টি আসনে জাপা প্রভাবশালী ছিল সেগুলো ফিরে পেতে দলটি বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। কয়েকটি আসনে প্রার্থীও নির্ধারিত হয়েছে। গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর এবং সিলেট বিভাগেও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দাঁড় করানো হবে। তবে তিনি মনে করেন, এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। প্রচারণায় বাধাহীন পরিবেশ দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় পার্টি “চমক” দেখাবে। কয়েকজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা দলে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। আরও কিছু চমকও প্রস্তুত আছে।
কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টি সবসময় নির্বাচনমুখী দল। পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হলে তারা পূর্ণমাত্রায় নির্বাচনে যাবে।
এদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির (জাপা) আনিসুল ইসলাম মাহমুদপন্থী অংশ এবং জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে একটি নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সম্ভাব্য নাম রাখা হয়েছে “জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট”। জোটের মুখপাত্র হিসেবে থাকবেন জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। রোববার গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।



















