বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত পিলখানা হত্যাযজ্ঞের সময় সেনা অভিযান চালানো হলে ভারত বাংলাদেশের ওপর হামলা করবে—এমন হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমদ। রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিডিআর হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং বর্বরতম হত্যাকাণ্ড। এতে দলগতভাবে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং তৎকালীন সরকারি দলের এমপি শেখ ফজলে নূর তাপসকে মূল সমন্বয়কারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হত্যাকাণ্ডে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন। তদন্তে ভারতের সংশ্লিষ্টতার ‘শক্তিশালী প্রমাণ’ পাওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানসহ সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। পরে কমিশন এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়ান-ইলেভেন সময়কালে বিডিআরের ডাল-ভাত কর্মসূচি, প্রেষণে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ নিয়ে জোয়ানদের ক্ষোভ, এবং বাহিনীর অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ভিত্তিতে বিদ্রোহে রূপ নেয়। এ বিদ্রোহে প্রতিবেশি দেশের ইন্ধনের কথাও উঠে এসেছে।
২০০৯ সালের ২৫–২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত এই ট্র্যাজেডিতে ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। মামলার রায় হলেও নেপথ্যের মূল পরিকল্পনাকারীরা অদৃশ্য থেকে যায়—এই রহস্য উন্মোচন ও দায়ীদের শনাক্ত করতেই কমিশনটি গঠিত হয়েছিল।
প্রতিবেদন গ্রহণকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতি দীর্ঘদিন অন্ধকারে ছিল। আপনারা সত্য উদ্ঘাটনে যে ভূমিকা রেখেছেন জাতি তা স্মরণে রাখবে। এই প্রতিবেদন জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে।”






















