ঢাকা ১০:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চলছে দানের টাকা গোনা, হুমায়ুনের জন্য হায়দ্রাবাদ থেকে 8 নিরাপত্তারক্ষী

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৫১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫০৯ বার পড়া হয়েছে

 

প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন—এমন অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা হুমায়ুন কবীর। কেন্দ্রীয় সুরক্ষা মেলে না–পাওয়া পর্যন্ত তিনি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হায়দরাবাদ থেকে আটজন বাউন্সার নিয়োগ করেছেন। তারা ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে পৌঁছেছেন। পাশাপাশি থাকছে রাজ্য সরকারের দেওয়া তিনজন নিরাপত্তারক্ষীও।

মঙ্গলবার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন সাংবাদিকদের বলেন, “আমার প্রাণে মারার হুমকি আসছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা না–পাওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তিন গার্ডের সঙ্গে আটজন বাউন্সার রাখছি।” বুধবার থেকেই তারা কাজে যোগ দেবেন বলে জানান তিনি।

এদিন হুমায়ুন তাঁর নতুন দলের রাজনৈতিক পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। জানান, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ১৩৫টি আসনে তাঁর দলের প্রার্থীরা লড়বেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করবেন—ভাড়ার কথাবার্তাও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। প্রতিদিন তিনি তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে যাবেন বলে ব্লু–প্রিন্ট ঠিক করা হয়েছে।

এদিকে বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য দানপেটির টাকা গোনার কাজ এখনও চলছে। সোমবার রাতে টাকা গোনার মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কাজ ধীরগতিতে এগোয়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১২টির মধ্যে ছয়টি বাক্সের টাকা গোনা হয়—পরিমাণ ৩৭ লাখ টাকা। রাত পর্যন্ত ১০টি বাক্স থেকে ওঠে ৬০ লাখেরও বেশি। আরও দু’টি বাক্স খোলা বাকি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সোমবার দুপুর পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি বলে জানান হুমায়ুন।

রাজনৈতিক মহলের মত, পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদই হয়ে উঠতে পারে নির্বাচনের ভরকেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ—৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের শিলান্যাস রাজনৈতিক মাঠে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নতুন অঙ্ক তৈরি করেছে। হুমায়ুন মুসলিম ভোট কতটা একত্রিত করতে পারেন, তার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করছে দুই ‘ফুল’ শিবিরের ভবিষ্যৎ।

হুমায়ুনের দাবি, তিনি তৃণমূলকে “সবক শেখাতে” চান। তার ভাষায়, “৩ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী যে চিত্রনাট্য লিখেছেন, তাতে তৃণমূলের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হয়ে গিয়েছে।”
আগামী ২২ ডিসেম্বর নিজের নতুন দলের নাম ঘোষণা করবেন তিনি। আসন সমঝোতা কার সঙ্গে হচ্ছে তা এখনো প্রকাশ না করলেও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা—এআইএমআইএম তাঁর সঙ্গে থাকতে পারে। হায়দরাবাদ থেকে বাউন্সার পাঠানোর বিষয়েও অনেকেই মনে করছেন, আসাদুদ্দিন ওয়াইসিই এ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

রাজ্যে মুসলিম অধ্যুষিত ১৩৫টি আসনকে লক্ষ্য করেই এগোতে চান হুমায়ুন। সব আসনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রচারে যাবেন বলেও জানান। সব মিলিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে হুমায়ুন কবীর এখন নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে উঠে আসছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সীমান্তে মৃত বাংলাদেশি মায়ের মুখ দেখলেন ভারতে থাকা মেয়ে

চলছে দানের টাকা গোনা, হুমায়ুনের জন্য হায়দ্রাবাদ থেকে 8 নিরাপত্তারক্ষী

আপডেট সময় ০৮:৫১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

 

প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন—এমন অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা হুমায়ুন কবীর। কেন্দ্রীয় সুরক্ষা মেলে না–পাওয়া পর্যন্ত তিনি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হায়দরাবাদ থেকে আটজন বাউন্সার নিয়োগ করেছেন। তারা ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে পৌঁছেছেন। পাশাপাশি থাকছে রাজ্য সরকারের দেওয়া তিনজন নিরাপত্তারক্ষীও।

মঙ্গলবার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন সাংবাদিকদের বলেন, “আমার প্রাণে মারার হুমকি আসছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা না–পাওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তিন গার্ডের সঙ্গে আটজন বাউন্সার রাখছি।” বুধবার থেকেই তারা কাজে যোগ দেবেন বলে জানান তিনি।

এদিন হুমায়ুন তাঁর নতুন দলের রাজনৈতিক পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। জানান, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ১৩৫টি আসনে তাঁর দলের প্রার্থীরা লড়বেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করবেন—ভাড়ার কথাবার্তাও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। প্রতিদিন তিনি তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে যাবেন বলে ব্লু–প্রিন্ট ঠিক করা হয়েছে।

এদিকে বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য দানপেটির টাকা গোনার কাজ এখনও চলছে। সোমবার রাতে টাকা গোনার মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কাজ ধীরগতিতে এগোয়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১২টির মধ্যে ছয়টি বাক্সের টাকা গোনা হয়—পরিমাণ ৩৭ লাখ টাকা। রাত পর্যন্ত ১০টি বাক্স থেকে ওঠে ৬০ লাখেরও বেশি। আরও দু’টি বাক্স খোলা বাকি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সোমবার দুপুর পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি বলে জানান হুমায়ুন।

রাজনৈতিক মহলের মত, পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদই হয়ে উঠতে পারে নির্বাচনের ভরকেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ—৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের শিলান্যাস রাজনৈতিক মাঠে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নতুন অঙ্ক তৈরি করেছে। হুমায়ুন মুসলিম ভোট কতটা একত্রিত করতে পারেন, তার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করছে দুই ‘ফুল’ শিবিরের ভবিষ্যৎ।

হুমায়ুনের দাবি, তিনি তৃণমূলকে “সবক শেখাতে” চান। তার ভাষায়, “৩ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী যে চিত্রনাট্য লিখেছেন, তাতে তৃণমূলের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হয়ে গিয়েছে।”
আগামী ২২ ডিসেম্বর নিজের নতুন দলের নাম ঘোষণা করবেন তিনি। আসন সমঝোতা কার সঙ্গে হচ্ছে তা এখনো প্রকাশ না করলেও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা—এআইএমআইএম তাঁর সঙ্গে থাকতে পারে। হায়দরাবাদ থেকে বাউন্সার পাঠানোর বিষয়েও অনেকেই মনে করছেন, আসাদুদ্দিন ওয়াইসিই এ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

রাজ্যে মুসলিম অধ্যুষিত ১৩৫টি আসনকে লক্ষ্য করেই এগোতে চান হুমায়ুন। সব আসনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রচারে যাবেন বলেও জানান। সব মিলিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে হুমায়ুন কবীর এখন নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে উঠে আসছেন।