জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী সুপরিকল্পিত ছকের অংশ। তিনি বলেন, এ হামলা কোনো একক ব্যক্তি বা প্রার্থীর ওপর আঘাত নয়, বরং নির্বাচন ঘিরে শুরু হওয়া একটি গভীর ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, দিল্লিতে বসেই আওয়ামী লীগ এসব পরিকল্পনা করছে এবং ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ ছাড়া এমন তৎপরতা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড জঙ্গি তৎপরতার শামিল এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে জবাবদিহির আওতায় এনে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ভারত সরকার একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়ে নৈতিক অপরাধ করেছে এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগকে সহায়তা করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। শুধু রাজনৈতিক নেতা বা প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই চলবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণপ্রতিরোধ বজায় না থাকলে প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। “জনগণই আমাদের আসল নিরাপত্তা,” বলেন তিনি।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, প্রশাসন ও পুলিশসহ বিভিন্ন ছদ্মবেশে সক্রিয় আওয়ামী লীগের লোকজনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থানকে পরিকল্পিতভাবে ভেরিফাই ও নরমালাইজ করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতির মাঠে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। মিডিয়া, টকশো, বিশ্ববিদ্যালয়ে গোপন বৈঠক, কোর্টপাড়ায় ‘জয়বাংলা’ স্লোগান এবং ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টিকে প্রস্তুত করার তৎপরতা—সব মিলিয়ে এটি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের একটি সমন্বিত উদ্যোগ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামীপন্থি বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা বিভিন্ন পরিচয়ে সমাজে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে—এ বিষয়ে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে।
তিনি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাইকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিশনের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেপ্তার এবং শুধু সরাসরি হামলাকারী নয়, পুরো পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
নির্বাচনি রাজনীতি প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, পরস্পরের বিরুদ্ধে কথাও বলা হবে—তবে তা যেন কোনোভাবেই সীমা অতিক্রম না করে। আওয়ামী লীগকে কোনো সুযোগ বা সুবিধা না দেওয়ার বিষয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলেও জানান তিনি।




















