ঢাকা ০৬:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি: নুর

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
  • ৫৪০ বার পড়া হয়েছে

এবার দলীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা চত্বরে এলজিইডি ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, ‘বৃহস্পতি থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের দলীয় অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাকে ও আমার নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়। এজন্য বরিশাল এবং পটুয়াখালী থেকে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। ভাড়ায় আনা সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক, বস্তাভর্তি ইট নিয়ে আমাদের পথরোধ করে মহড়া দেয়। সড়কে গাছের গুঁড়ি ও ইট ফেলে পথে পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীরা এ হামলা করেছে অভিযোগ করে নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে হাসান মামুন কোনো রাজনৈতিক মামলার শিকার হননি। অথচ আমি আর আমার পরিবার পদে পদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এই হাসান মামুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নুর বলেন, স্থানীয়ভাবে যারা সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের অপকর্ম তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে এই বিভাজনের দায় দলের ওপরই বর্তাবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গলচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর রাতে ভিপি নুরকে প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

ঘটনার বিষয়ে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. জুয়েল জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে বাজার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের মতবিনিময় সভা ছিল। তাদের দলীয় অফিসের সামনে তারা প্রোগ্রাম শুরু করেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক কথা বলতে থাকেন। তখন ভিপি নুরের ছোট ভাই আমিরুল ইসলামসহ দুজন বিএনপির সভাপতির কাছে অনুরোধ করেন তাদের মিটিং আধাঘণ্টা দেরিতে করার জন্য।

কিন্তু বিএনপি নেতারা গণ অধিকার পরিষদকে মিটিং করার জন্য ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেন, যা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মফিজসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন। এতে নুরের ছোট ভাই আমিনুলসহ গণ অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। অন্য আহতরা হলেনÑকনক, জিহাদ, শামিম, জিহাদ আকন ও জালাল।

চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস জানান, গত বৃহস্পতিবার তাদের ইউনিয়ন কর্মিসভা চলাকালে ভিপি নুরের লোকজন হঠাৎ অফিসে ঢুকে হামলা করেন। এ সময় নেত্রীর ছবিও ভাঙচুর করা হয়। হামলায় বিএনপির অন্তত ২০-২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।

আহতরা হলেনÑচরবিশ্বাস ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মাকসুদ খান, আল-আমীন, মহিউদ্দিন আল মুইন, তাহসান ইসলাম, মো. বাপ্পি, মো. লোকমান, শিহাব খলিফা, হৃদয় মামুন, জাকির বয়াতি, মোহাম্মদ মফিজ, সৈকত দফাদার, মেহেদী, তরিকুল ও সোহেল । এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি: নুর

আপডেট সময় ১১:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

এবার দলীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা চত্বরে এলজিইডি ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, ‘বৃহস্পতি থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের দলীয় অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাকে ও আমার নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়। এজন্য বরিশাল এবং পটুয়াখালী থেকে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। ভাড়ায় আনা সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক, বস্তাভর্তি ইট নিয়ে আমাদের পথরোধ করে মহড়া দেয়। সড়কে গাছের গুঁড়ি ও ইট ফেলে পথে পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীরা এ হামলা করেছে অভিযোগ করে নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে হাসান মামুন কোনো রাজনৈতিক মামলার শিকার হননি। অথচ আমি আর আমার পরিবার পদে পদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এই হাসান মামুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নুর বলেন, স্থানীয়ভাবে যারা সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের অপকর্ম তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে এই বিভাজনের দায় দলের ওপরই বর্তাবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গলচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর রাতে ভিপি নুরকে প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

ঘটনার বিষয়ে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. জুয়েল জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে বাজার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের মতবিনিময় সভা ছিল। তাদের দলীয় অফিসের সামনে তারা প্রোগ্রাম শুরু করেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক কথা বলতে থাকেন। তখন ভিপি নুরের ছোট ভাই আমিরুল ইসলামসহ দুজন বিএনপির সভাপতির কাছে অনুরোধ করেন তাদের মিটিং আধাঘণ্টা দেরিতে করার জন্য।

কিন্তু বিএনপি নেতারা গণ অধিকার পরিষদকে মিটিং করার জন্য ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেন, যা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মফিজসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন। এতে নুরের ছোট ভাই আমিনুলসহ গণ অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। অন্য আহতরা হলেনÑকনক, জিহাদ, শামিম, জিহাদ আকন ও জালাল।

চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস জানান, গত বৃহস্পতিবার তাদের ইউনিয়ন কর্মিসভা চলাকালে ভিপি নুরের লোকজন হঠাৎ অফিসে ঢুকে হামলা করেন। এ সময় নেত্রীর ছবিও ভাঙচুর করা হয়। হামলায় বিএনপির অন্তত ২০-২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।

আহতরা হলেনÑচরবিশ্বাস ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মাকসুদ খান, আল-আমীন, মহিউদ্দিন আল মুইন, তাহসান ইসলাম, মো. বাপ্পি, মো. লোকমান, শিহাব খলিফা, হৃদয় মামুন, জাকির বয়াতি, মোহাম্মদ মফিজ, সৈকত দফাদার, মেহেদী, তরিকুল ও সোহেল । এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।