বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাকে ভারতের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত উল্লেখ করে ভারত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ভারতের জাতীয় সংসদে কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন তিনি। বিষয়টি শুক্রবার প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জয়শঙ্কর বলেন, “সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের একটি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে একটি বিতর্কিত মানচিত্র প্রদর্শন করেছে, যেখানে ভারতের একাধিক রাজ্যকে বাংলাদেশি ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে।”
তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, মানচিত্রটি প্রদর্শনকারী গোষ্ঠীর কোনো বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নেই এবং সরকারিভাবে এমন কোনো সংগঠনের অস্তিত্বও বাংলাদেশে স্বীকৃত নয়। এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন যেকোনো কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জয়শঙ্কর আরও দাবি করেন, বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশের পেছনে তুরস্কভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী গোষ্ঠী—তুর্কি যুব ফেডারেশন—এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য যাচাইকারী প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাফ্যাক্ট’ নিশ্চিত করেছে যে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামে কোনো সক্রিয় গোষ্ঠী দেশে নেই। প্রদর্শিত মানচিত্রটি একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপিত হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে বিতর্কিত মানচিত্রটি প্রথম প্রদর্শিত হয়। এই ঘটনার জেরে ভারতে উদ্বেগ ছড়ায় এবং সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক তৈরি হয়। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও একই ধরনের একটি মানচিত্র ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন, যা পরবর্তীতে সমালোচনার মুখে সরিয়ে নেন।