শেরপুরের শ্রীবরদীতে অসুস্থ স্ত্রীকে মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘিরে বৃদ্ধ স্বামীর শাস্তির দাবি উঠলেও সরেজমিনে পাওয়া তথ্যে চিত্র ভিন্ন। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন অসুস্থ স্ত্রীকে সেবা করা এক বৃদ্ধ নাতির ‘ভিউ ব্যবসার’ শিকার হয়েছেন।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে শ্রীবরদীর কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমান প্রায় ১০ বছর ধরে শয্যাশায়ী স্ত্রী খোরশেদার সেবা করে আসছিলেন। স্ত্রীকে প্রাকৃতিক কাজ সাড়ার সুবিধার্থে তিনি একটি প্লাস্টিকের কমোড চেয়ার কিনে আনেন এবং তা বসানোর জন্য উঠানে গর্ত করেন। এ সময় খোরশেদা বিছানায়ই প্রাকৃতিক কাজ সেরে ফেললে খলিলুর ক্ষোভে তাকে টেনে গর্তের কাছে নিয়ে যান। এ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন নাতি খোকন মিয়া, যিনি উদ্ধার না করে উল্টো নানা প্ররোচনা দেন।
পরে বৃদ্ধার চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেন। খোকন মিয়া ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়। স্থানীয়রা জানান, খলিলুর দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে গোসল করানো, খাওয়ানোসহ সব সেবা দিয়ে আসছিলেন, তবে দীর্ঘ সময় নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে থাকার কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন।
খলিলুর রহমান বলেন, “আমি ছাড়া আমার স্ত্রীর আর কেউ নেই। এত বছর ধরে সেবা করেছি। সেদিন হঠাৎ রাগে এ ঘটনা ঘটিয়েছি, আমি অনুতপ্ত।”
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের হোসেন জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপিত তথ্য অনেকটাই বিভ্রান্তিকর। খলিল তার স্ত্রীকে দীর্ঘদিন সেবা করেছেন, তবে মানসিক চাপের কারণে এমন আচরণ করে থাকতে পারেন। প্রশাসন দম্পতিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর চেষ্টা করছে।
বৃদ্ধ দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে প্রবাসে, অপর মেয়ে অন্ধ এবং রাজধানীতে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।