ঢাকা ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ওসিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৪৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৮১ বার পড়া হয়েছে

বগুড়ার ধুনটে বহুল আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ মামলায় মুরাদুজ্জামান মুকুল এবং মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগে সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জিয়া উদ্দিন মাহমুদ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন ধুনট উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল (৪৮) এবং গাজিপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২ এ কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা (৫১)।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে ১ হাজার ৫০০ পাতার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি অ্যাডভোকেট মো. মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর এলাকার অফিসারপাড়ার কলেজ শিক্ষক দম্পতির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে মুরাদুজ্জামান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২০২২ সালের ১২ মে ধুনট থানায় মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।

ওই মামলায় মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তারকালে জব্দ মোবাইল ফোনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পায় পুলিশ। কিন্তু মামলা তদন্তকালে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ভিডিওসহ বেশকিছু আলামত নষ্ট করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মামলার বাদী। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায়।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে বগুড়া পিবিআইর এসআই সবুজ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার সাক্ষীরা মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দেন। কিন্তু সাক্ষীদের দেওয়া প্রকৃত সাক্ষ্য গোপন করে এসআই সবুজ আলী মনগড়াভাবে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করে ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় মামলার বাদীর নারাজির আবেদন ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট মঞ্জুর করে সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বগুড়া পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৬ বার পরিবর্তনের পর অবশেষে বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় আসামি মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগপত্র প্রমাণিত হওয়ায় কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ওসিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আপডেট সময় ০৮:৪৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

বগুড়ার ধুনটে বহুল আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ মামলায় মুরাদুজ্জামান মুকুল এবং মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগে সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জিয়া উদ্দিন মাহমুদ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন ধুনট উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল (৪৮) এবং গাজিপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২ এ কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা (৫১)।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে ১ হাজার ৫০০ পাতার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি অ্যাডভোকেট মো. মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর এলাকার অফিসারপাড়ার কলেজ শিক্ষক দম্পতির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে মুরাদুজ্জামান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২০২২ সালের ১২ মে ধুনট থানায় মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।

ওই মামলায় মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তারকালে জব্দ মোবাইল ফোনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পায় পুলিশ। কিন্তু মামলা তদন্তকালে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ভিডিওসহ বেশকিছু আলামত নষ্ট করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মামলার বাদী। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায়।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে বগুড়া পিবিআইর এসআই সবুজ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার সাক্ষীরা মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দেন। কিন্তু সাক্ষীদের দেওয়া প্রকৃত সাক্ষ্য গোপন করে এসআই সবুজ আলী মনগড়াভাবে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করে ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় মামলার বাদীর নারাজির আবেদন ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট মঞ্জুর করে সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বগুড়া পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৬ বার পরিবর্তনের পর অবশেষে বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় আসামি মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগপত্র প্রমাণিত হওয়ায় কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।