ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে মরিচের গুঁড়া ছিটালেন স্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫৮:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৩০ বার পড়া হয়েছে

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মাদানগীর এলাকার বাসিন্দা দীনেশ। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। ঘুমন্ত স্বামীর শরীরে হঠাৎ করেই ফুটন্ত তেল ও লাল মরিচের গুঁড়া ঢেলে দেন স্ত্রী। মুহূর্তেই ঘুম ভেঙে যন্ত্রণায় চিৎকার করে ছোটাছুটি শুরু করেন স্বামী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন দীনেশ।

 

বুধবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, দেশটির একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে ২৮ বছর বয়সী দীনেশ।

 

 

 

গত ৩ অক্টোবর গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় দিল্লির সাফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন তিনি।

 

একই দিনে আম্বেদকর নগর থানায় দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, সেদিন রাত ৩টার দিকে দীনেশ ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন স্ত্রী তার শরীরে গরম তেল ঢেলে দেন। ওই সময় তাদের আট বছর বয়সী মেয়েও বাড়িতে ছিল। দীনেশ পুলিশকে বলেছেন, গত ২ অক্টোবর রাতে তিনি কাজ শেষে দেরীতে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

 

‘‘আমার স্ত্রী ও মেয়ে পাশেই ঘুমিয়ে ছিল। রাত প্রায় ৩টা ১৫ মিনিটে হঠাৎ শরীরজুড়ে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি। দেখি আমার স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছে এবং আমার শরীরে ও মুখে ফুটন্ত তেল ঢালছে। আমি উঠে সাহায্য চাওয়ার আগেই সে আমার পোড়া জায়গায় মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়।’’

 

দীনেশ বলেন, তিনি প্রতিবাদ করলে স্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেন, যদি চিৎকার করো, আরও গরম তেল ঢেলে দেব। কিন্তু তীব্র যন্ত্রণায় তিনি চিৎকার করা বন্ধ করতে পারেননি। তার আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশী ও নিচতলায় থাকা বাড়ির মালিকের পরিবার ছুটে আসে।

 

বাড়ির মালিকের মেয়ে অঞ্জলি বলেন, আমার বাবা ওপরে গিয়ে দেখেন রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আমরা দরজা খুলতে বলি। দরজা খুলতেই দীনেশকে মেঝেতে কাতরাতে দেখা যায়। এ সময় তার স্ত্রী ঘরের ভেতর লুকিয়ে ছিলেন।

 

অঞ্জলি বলেন, তার বাবা দীনেশকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলে ওই নারী বলেন, তিনিই স্বামীকে হাসপাতালে নিচ্ছেন। কিন্তু বাইরে বেরিয়েই তিনি উল্টো দিকে যেতে থাকেন। তখন সন্দেহ হয়। আমার বাবা তাকে থামিয়ে দেন এবং একটি অটো ডেকে একাই দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

প্রথমে দীনেশকে কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু বুক, মুখ ও হাতে গভীর ক্ষত হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সাফদরজং হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পুলিশ বলছে, মেডিক্যাল রিপোর্টে তার আঘাতকে ‘গুরুতর ও বিপজ্জনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, তাদের বিয়ে হয়েছে আট বছর আগে এবং দাম্পত্য সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছিল। দুই বছর আগে তার স্ত্রী ‘ক্রাইম এগেইনস্ট উইমেন’ সেলে অভিযোগ করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে তা আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়।

 

দীনেশের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি আইনের (বিএনএস) ১১৮ (বিপজ্জনক উপায়ে আঘাত), ১২৪ (অ্যাসিড বা অনুরূপ পদার্থ ব্যবহার করে গুরুতর আঘাত) এবং ৩২৬ (আগুন, বিস্ফোরক বা অনুরূপ উপায়ে ক্ষতি সাধন) ধারায় মামলা করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে মরিচের গুঁড়া ছিটালেন স্ত্রী

আপডেট সময় ১১:৫৮:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মাদানগীর এলাকার বাসিন্দা দীনেশ। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। ঘুমন্ত স্বামীর শরীরে হঠাৎ করেই ফুটন্ত তেল ও লাল মরিচের গুঁড়া ঢেলে দেন স্ত্রী। মুহূর্তেই ঘুম ভেঙে যন্ত্রণায় চিৎকার করে ছোটাছুটি শুরু করেন স্বামী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন দীনেশ।

 

বুধবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, দেশটির একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে ২৮ বছর বয়সী দীনেশ।

 

 

 

গত ৩ অক্টোবর গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় দিল্লির সাফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন তিনি।

 

একই দিনে আম্বেদকর নগর থানায় দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, সেদিন রাত ৩টার দিকে দীনেশ ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন স্ত্রী তার শরীরে গরম তেল ঢেলে দেন। ওই সময় তাদের আট বছর বয়সী মেয়েও বাড়িতে ছিল। দীনেশ পুলিশকে বলেছেন, গত ২ অক্টোবর রাতে তিনি কাজ শেষে দেরীতে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

 

‘‘আমার স্ত্রী ও মেয়ে পাশেই ঘুমিয়ে ছিল। রাত প্রায় ৩টা ১৫ মিনিটে হঠাৎ শরীরজুড়ে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি। দেখি আমার স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছে এবং আমার শরীরে ও মুখে ফুটন্ত তেল ঢালছে। আমি উঠে সাহায্য চাওয়ার আগেই সে আমার পোড়া জায়গায় মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়।’’

 

দীনেশ বলেন, তিনি প্রতিবাদ করলে স্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেন, যদি চিৎকার করো, আরও গরম তেল ঢেলে দেব। কিন্তু তীব্র যন্ত্রণায় তিনি চিৎকার করা বন্ধ করতে পারেননি। তার আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশী ও নিচতলায় থাকা বাড়ির মালিকের পরিবার ছুটে আসে।

 

বাড়ির মালিকের মেয়ে অঞ্জলি বলেন, আমার বাবা ওপরে গিয়ে দেখেন রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আমরা দরজা খুলতে বলি। দরজা খুলতেই দীনেশকে মেঝেতে কাতরাতে দেখা যায়। এ সময় তার স্ত্রী ঘরের ভেতর লুকিয়ে ছিলেন।

 

অঞ্জলি বলেন, তার বাবা দীনেশকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলে ওই নারী বলেন, তিনিই স্বামীকে হাসপাতালে নিচ্ছেন। কিন্তু বাইরে বেরিয়েই তিনি উল্টো দিকে যেতে থাকেন। তখন সন্দেহ হয়। আমার বাবা তাকে থামিয়ে দেন এবং একটি অটো ডেকে একাই দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

প্রথমে দীনেশকে কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু বুক, মুখ ও হাতে গভীর ক্ষত হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সাফদরজং হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পুলিশ বলছে, মেডিক্যাল রিপোর্টে তার আঘাতকে ‘গুরুতর ও বিপজ্জনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, তাদের বিয়ে হয়েছে আট বছর আগে এবং দাম্পত্য সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছিল। দুই বছর আগে তার স্ত্রী ‘ক্রাইম এগেইনস্ট উইমেন’ সেলে অভিযোগ করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে তা আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়।

 

দীনেশের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি আইনের (বিএনএস) ১১৮ (বিপজ্জনক উপায়ে আঘাত), ১২৪ (অ্যাসিড বা অনুরূপ পদার্থ ব্যবহার করে গুরুতর আঘাত) এবং ৩২৬ (আগুন, বিস্ফোরক বা অনুরূপ উপায়ে ক্ষতি সাধন) ধারায় মামলা করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।