ইসরায়েলি কারাগারে আটক অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অধিকারকর্মী ও ইতালির নাগরিক টমাসো বোর্তোলাজ্জি। তিনি ছিলেন মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজ মারিয়া ক্রিস্টিন–এর ক্যাপ্টেন।
৪০ বছর বয়সি বোর্তোলাজ্জি ফ্লোটিলার অংশ হিসেবে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা করেছিলেন। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা বন্দর থেকে ৪৪টি জাহাজের বিশাল বহরটি গাজার উদ্দেশে রওনা দেয়, যার লক্ষ্য ছিল অন্তত ২০ লাখ অনাহারী ফিলিস্তিনিকে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।
তবে ১ অক্টোবর রাতে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী বহরটিকে আটকে দেয় এবং অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীকে আটক করে। ৪ অক্টোবর শনিবার আটক ১৩৭ জন স্বেচ্ছাসেবককে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়। তাদের মধ্যেই ছিলেন টমাসো বোর্তোলাজ্জি।
ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বোর্তোলাজ্জি জানান, ইসরায়েলি কারাগারে আটক থাকার অভিজ্ঞতা এবং তুর্কি অধিকারকর্মীদের বিশ্বাস তাকে ইসলাম গ্রহণে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন,
“কালিমা পাঠের সময় নতুন জন্মের মতো অনুভূতি হয়েছিল।”
আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেখা যায়, তিনি ফিলিস্তিনের প্রতীকী সাদা-কালো কেফিয়াহ পরিহিত ছিলেন। বোর্তোলাজ্জি জানান,
“আমার দলটি তুরস্ক থেকে এসেছিল এবং প্রায় সবাই মুসলিম ছিল। তারা যখন নামাজ পড়ছিল, তখন ইসরায়েলি পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়। আমি এর বিরোধিতা করি এবং পরে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে শাহাদা পাঠ করি।”
শাহাদাত পাঠের আগে বোর্তোলাজ্জি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “উল্কি আঁকা থাকার কারণে ঈশ্বর কি আমাকে মুসলিম হিসেবে কবুল করবেন?” — তার তুর্কি সঙ্গী বাকির ডেভিলি উত্তর দেন,
“বিশ্বাস চেহারার নয়, হৃদয়ের ব্যাপার।”
ডেভিলির ভাষায়, কারাগারের গাড়িতে নিয়েই বোর্তোলাজ্জি ইসলাম গ্রহণ করেন। শাহাদা পাঠের পর ইসরায়েলি পুলিশ তাকে পৃথক সেলে নিক্ষেপ করে। এ সময় ডেভিলি বলেন,
“টমি, ইসলাম গ্রহণের মাত্র দশ সেকেন্ডেই তুমি তোমার ইসলামের মূল্য দিতে শুরু করেছো।”
বোর্তোলাজ্জি বলেন, ইসলাম গ্রহণের পর তিনি অন্তরে গভীর শান্তি ও আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করছেন।