সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি শনিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক বিশ্লেষণে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক আলোচনায় এক উদ্বেগজনক বিষয় মানুষের মুখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ছে—শীঘ্রই দেশের কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ নেতাকে ফাঁসিতে দেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, এই ধরনের কথা যখন সাধারণ মানুষের মুখে চলে আসে, তখন তা বাস্তবে রূপ নেয় এমন ঘটনাও দেখা গেছে।
রনি বলেন, ২০২২-২৩ সালের সময়ও মানুষের মধ্য থেকে কিছু রাজনৈতিক ভবিষ্যতবাণী উচ্চারণ হয়েছিল; তখনও অনেকেই বলেছিলেন—শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে, আওয়ামী লীগ পতিত হবে। তখনও নেতারা বলেছিলেন, আমরা পালাই না, আমরা ভয় পাই না। এখন অনুরূপভাবে নতুন নতুন কথাবার্তা চলছে। কেউ বলছেন—ড. ইউনূস ভালোভাবে নির্বাচন পূর্বক শাসন চালাতে পারবেন না; আবার কেউ বলছেন, কিছু উপদেষ্টা পালিয়ে যাবে—এসব মত থাকায় জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আবার একইভাবে বলা হচ্ছে—যেসব আওয়ামী লীগ নেতারা আটক রয়েছেন, নির্বাচনের আগে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া হবে। কিভাবে হবে, কবে হবে—এসব জানি না। আইনগতভাবে সম্ভব কি না—এই আলোচনাটা হচ্ছে না; শুধু মানুষের মুখে মুখে এই ধারণা বেড়েই চলছে।’’
রনি সংবাদে উল্লেখ করেন যে, জনগণের মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিছু নির্দিষ্ট নামও—সেগুলোর মধ্যে সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও পলকের নাম উঠছে। তবে তিনি বলেন, কারো কারো নাম কেন ওই তালিকায় আসছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। বিশেষ করে রাশেদ খান মেনন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘তিনি ভিন্ন একটি দলের নেতা ছিলেন; ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও তিনি সবসময় বিরক্তিকর ছিলেন না—কেউকখনো অনেক সত্য কথা বলেছেন, যা প্রধানমন্ত্রীকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তাই ফাঁসির তালিকায় তার নাম কেন—এটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’’ রনি এমনটি ঘটলে তা বাংলাদেশের জন্য ‘‘নতুন অধ্যায়’’ হবে বলে সতর্ক করে দেন।
সাবেক সংসদ সদস্য আরও বলেন, জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে—কেউ বলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না, কেউ বলছে হবে এবং বিএনপি যেভাবেই হোক ক্ষমতায় উঠে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন হবে না বলে যে দাবি তা বিস্তর—কিন্তু অন্য দিক থেকেও অনেকেই বলছে নির্বাচন হবে। তবে যেই বিতর্ক চলছে সেখানে রাজনৈতিক তীব্রতা বজায় থাকবে।’’ রনি বারবার সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাড়াহুড়ায় সিদ্ধান্ত বা টার্গেটিং করলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।
রনি বলেন, জনমনে ভয় সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে যদি কারো বিরুদ্ধে এমন চরম সিদ্ধান্ত কার্যকর করার চেষ্টা করা হয়—তাহলে তার পরিণতি ভাল হবে না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিশোধ ও দ্রুত বিচারপদ্ধতিতে শাস্তি দাবি করাকে সমর্থন করেন না এবং সবাইকে আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পরামর্শ দেন।
সম্পাদনা ও সূত্র: গোলাম মাওলা রনির নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যের রেকর্ড থেকে সংগৃহীত।