কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তারাপুর বাজারে দোকানে চুরির অভিযোগে দুই কিশোরের ওপর রাতভর নির্যাতন চালানো হয়েছে। রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে তাদের মোবাইল ফোনে ডেকে এনে দোকানে আটকে রাখা হয় এবং রাত ২টা থেকে ফজরের আজান পর্যন্ত বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।
সোমবার সকালে স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল করিম বিশ্বাসের নেতৃত্বে বাজারের পাশের একটি করাতকলে সালিশ বসে। সেখানে ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের দোকানে চুরির ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই কিশোরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এক কিশোরের মা ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
নির্যাতনের ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায় কয়েকজন মিলে এক কিশোরের হাত-মুখ চেপে ধরে লাঠি দিয়ে নির্যাতন করছে। নির্যাতনের সময় কিশোরটি চিৎকার করে বলে, “আমি কিছু করি নাই, ও মা গো…”
ভুক্তভোগী কিশোররা জানায়, তারা নিয়মিত আজাদের দোকানে ক্যারাম খেলত। রোববার রাতে দোকান থেকে টাকা ও মালামাল খোয়া যাওয়ার পর আজাদ তাদের সন্দেহ করে ফোনে ডেকে নেয় এবং সারারাত মারধর করে।
এক কিশোরের মা বলেন, “আমার ছেলে চুরি করেনি। তবুও অমানবিকভাবে মারধর করেছে। বাধ্য হয়ে জরিমানার টাকা দিয়েছি, কিন্তু আমরা এর বিচার চাই।”
অন্য কিশোরের মা জানান, “আমরা থানায় মামলা করব। এমন নির্যাতন কেউ করতে পারে না।”
দোকানদার আবুল কালাম আজাদ দাবি করেছেন, “আমি নিজে মারিনি, উৎসুক জনতা মারধর করেছে। পরে তারা চুরির কথা স্বীকার করেছে। বিএনপি নেতা করিম বিষয়টি সালিশে মীমাংসা করেন।”
তবে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল করিম বিশ্বাস বলেন, “আমি সালিশ করিনি। শুধু চোরদের গণপিটুনি থেকে সরিয়ে দিয়েছি।”
কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”























