ঢাকার মহাখালী এলাকায় অবস্থিত কড়াইল বস্তিতে মঙ্গলবার বিকেল ভয়াবহ আগুন লেগে কমপক্ষে ৫০০টির মতো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে বাসিন্দারা তাদের জমানো সব ধনসম্পদ হারিয়েছেন এবং শীতের রাতে নিরাপদ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।
লুৎফর রহমান ও তার স্ত্রী আসমা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কড়াইল বস্তিতে বসবাস করেন। লুৎফর রিকশা চালান, আর আসমা গার্মেন্টসে কাজ করেন। তাদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। আগুনে তাদের ঘর ও সব জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। লুৎফর জানান, আগুন লাগার সময় তিনি গুলশানে রিকশা চালাচ্ছিলেন। দ্রুত বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করলেও রাস্তা বন্ধ থাকায় যেতে পারেননি।
লুৎফর বলেন, “সঙ্গে মোবাইল ছিল না। আগুনের পর স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। ঘরের জিনিসপত্র সব পুড়ে গেছে। রাত কাটাব কোথায়, জানি না।”
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা রাব্বি জানান, আগুন লাগার সময় তিনি মোহাম্মদপুরে ছিলেন। আগুনের খবরে এসে দেখেন তাদের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। “২০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে। এই শীতের রাতে থাকব কোথায়?”—তিনি প্রশ্ন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বস্তিবাসীর আহাজারি পরিবেশ ভারী করে দিয়েছে। আগুনে কিছু হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, ঘরের ‘সবকিছুই’ পুড়ে গেছে।
বস্তিবাসী সুমন আহম্মেদ বলেন, “আগুনের সময় বাসার বাইরে ছিলাম। খবর শুনে দৌড়াইয়া এলাম, সব শেষ হয়ে গেছে।” আর ফজলু জানান, আগুনে প্রায় ৫ শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। যেসব ঘরে আগুন এখনও লাগেনি, সেসব থেকে বাসিন্দারা তাড়াহুড়ো করে মূল্যবান জিনিস বের করার চেষ্টা করছেন।
লাভলী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সাত বছর ধরে সংগ্রহ করা টিভি, ফ্রিজসহ সব আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। মাসে মাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতাম, সব শেষ।”
ফায়ার সার্ভিস জানায়, বিকেল ৫:২২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা ১৯টি ইউনিট নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। যানজট ও সরু গলির কারণে গাড়ি সরাসরি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি, তাই দীর্ঘ পাইপ টেনে পানি ছিটাতে হয়েছে।




















