ঢাকা ০৩:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহান বিজয়ের মাসে অপূর্ণ স্বপ্নের আকুলতা: স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ অধরা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৫৬:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৫১ বার পড়া হয়েছে

শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। বাঙালির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ—দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মাস। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া এবং স্বাধীনরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনিবার্য পরিণতি ছিল এই মুক্তিযুদ্ধ। হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণের আবেগে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা নির্বিশেষে অংশগ্রহণ আর অগণিত শহীদের আত্মদানেই বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায় স্বাধীন বাংলাদেশ।

অসাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সাম্যের যে চূড়ান্ত বিজয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা আজও প্রেরণার উৎস। তবে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, সমাজ থেকে অন্যায় ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন না হলে একাত্তরের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে ওঠা সম্ভব নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি পরিচয়ই ছিল মুখ্য। ধর্ম বা পরিচয় নয়, স্বাধীনতার পক্ষেই ছিল জাতির বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাই মুক্তিযুদ্ধের সার্বজনীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।”

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, “মানুষের রক্ত, আত্মত্যাগ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মহত্তম অবদান সত্য হলেও স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা—ন্যায়ভিত্তিক সমাজ—৫৪ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “ন্যায়ভিত্তিক সমাজ অধরা থাকায় বিভিন্ন সময়ে গণআন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। মানুষের প্রাণের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবেই।”

অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, “সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি। আন্দোলন-সংগ্রামসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি কার্যক্রমই এ নীতির ওপর দাঁড়ানো উচিত।”

মহান বিজয়ের মাসে তাই প্রশ্ন ফিরে আসে—স্বাধীনতার অঙ্গীকার পূরণে আমরা কতটা এগোতে পেরেছি? মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মর্যাদাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের দাবি আবারও উচ্চকিত হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

শাজাহান খানের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাহারায় যুবদল নেতা

মহান বিজয়ের মাসে অপূর্ণ স্বপ্নের আকুলতা: স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ অধরা

আপডেট সময় ১০:৫৬:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। বাঙালির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ—দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মাস। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া এবং স্বাধীনরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনিবার্য পরিণতি ছিল এই মুক্তিযুদ্ধ। হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণের আবেগে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা নির্বিশেষে অংশগ্রহণ আর অগণিত শহীদের আত্মদানেই বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায় স্বাধীন বাংলাদেশ।

অসাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সাম্যের যে চূড়ান্ত বিজয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা আজও প্রেরণার উৎস। তবে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, সমাজ থেকে অন্যায় ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন না হলে একাত্তরের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে ওঠা সম্ভব নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি পরিচয়ই ছিল মুখ্য। ধর্ম বা পরিচয় নয়, স্বাধীনতার পক্ষেই ছিল জাতির বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাই মুক্তিযুদ্ধের সার্বজনীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।”

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, “মানুষের রক্ত, আত্মত্যাগ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মহত্তম অবদান সত্য হলেও স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা—ন্যায়ভিত্তিক সমাজ—৫৪ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “ন্যায়ভিত্তিক সমাজ অধরা থাকায় বিভিন্ন সময়ে গণআন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। মানুষের প্রাণের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবেই।”

অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, “সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি। আন্দোলন-সংগ্রামসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি কার্যক্রমই এ নীতির ওপর দাঁড়ানো উচিত।”

মহান বিজয়ের মাসে তাই প্রশ্ন ফিরে আসে—স্বাধীনতার অঙ্গীকার পূরণে আমরা কতটা এগোতে পেরেছি? মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মর্যাদাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের দাবি আবারও উচ্চকিত হয়।