ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোটা দেশকে তিনি এক সুতোয় বেঁধেছেন

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২৭ বার পড়া হয়েছে

 

গোটা দেশ এখন তাকিয়ে আছে এভারকেয়ার হাসপাতালের দিকে। গভীর উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছে একজন অকুতোভয় মানুষের সুস্থতার জন্য। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে মানুষ প্রার্থনা করছে জাতির ঐক্যের প্রতীক এক অনন্য নেত্রীর আরোগ্যের জন্য। প্রশ্ন জাগে—কবে শেষ আমরা এভাবে একসঙ্গে হয়েছিলাম? কবে এমনভাবে ভেদাভেদ ভুলে কোটি মানুষের ভালোবাসা এক বিন্দুতে মিলেছিল?

আমরা নানা পথে, নানা মতভেদে বিভক্ত একটি জাতি। খেলাধুলা ছাড়া খুব কম সময়েই আমাদের দেখা মেলে এমন ঐক্যের। অথচ ঐক্যই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি; বিভক্তি আমাদের দুর্বলতা। এ কারণেই স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারিনি।

কিন্তু ইতিহাস বলছে—বাংলাদেশ যখনই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তখনই হয়েছে অপরাজেয়।

বেগম খালেদা জিয়া সেই জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি বহুবার ভেদাভেদ দূর করে জাতিকে এক সুতোয় গেঁথেছেন। যখন বাংলাদেশ স্বৈরশাসনের অন্ধকারে পথ হারিয়েছিল, তখনই তিনি দৃঢ়চিত্তে রাজনীতিতে অবতীর্ণ হন। একজন গৃহিণী থেকে হয়ে ওঠেন জাতির কান্ডারি। সব মত ও পথের মানুষকে একত্র করতে সক্ষম হয়েছিলেন তাঁর অসীম ধৈর্য, দেশপ্রেম ও দূরদর্শিতা দিয়ে। এমনকি যারা তাঁকে সমালোচনা করেছে, তাদেরও সঙ্গে নিয়ে লড়েছেন গণতন্ত্রের জন্য। আপসহীন, অকুতোভয়—বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর সেই অবস্থান এখনো অটল।

১৯৯০-এর স্বৈরাচার পতনের পর জনগণ তাঁকেই নির্বাচিত করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। বিএনপি রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির পক্ষে থাকলেও জাতীয় ঐক্য ও জনগণের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি সংবিধান সংশোধনে রাজি হন এবং দেশে চালু করেন সংসদীয় গণতন্ত্র।
১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রের স্বার্থে তিনি প্রবর্তন করেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা—যা দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি গড়ে দেয়।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য দৃষ্টান্ত। হিংসাত্মক ও কুরুচিপূর্ণ রাজনীতির বিপরীতে তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও মার্জিত। কখনো অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেননি; সবসময় মিতভাষী ও সুশীল আচরণে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারা গড়ে তুলেছেন।
রাজনীতি প্রতিহিংসার পথ নয়—এই বার্তাই তিনি নিজের কর্ম ও চরিত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

যারা তাঁকে কটূক্তি করেছে, যাদের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তিনি বিনা অপরাধে দুই বছরের বেশি সময় কারাবরণ করেছেন—তাদের সম্পর্কেও তিনি কখনো বিষোদ্গার করেননি। এটি তাঁর অনন্য মানবিকতা ও ভদ্রতার পরিচয়, যা আজ তাঁকে আরও উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

এই কারণেই এখন দলমত-নির্বিশেষে মানুষ তাঁর আরোগ্য কামনায় একত্র হয়েছে। বেগম জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বিরল দৃষ্টান্ত—যা আগামী প্রজন্মের জন্য পথনির্দেশক।

দেশবাসীর একটাই আশা—তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশের জন্য, সুস্থ রাজনীতির জন্য, এবং জনগণের স্বার্থে তাঁর প্রয়োজন আজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যা করা হতে পারে: ডিবিপ্রধান

গোটা দেশকে তিনি এক সুতোয় বেঁধেছেন

আপডেট সময় ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

 

গোটা দেশ এখন তাকিয়ে আছে এভারকেয়ার হাসপাতালের দিকে। গভীর উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছে একজন অকুতোভয় মানুষের সুস্থতার জন্য। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে মানুষ প্রার্থনা করছে জাতির ঐক্যের প্রতীক এক অনন্য নেত্রীর আরোগ্যের জন্য। প্রশ্ন জাগে—কবে শেষ আমরা এভাবে একসঙ্গে হয়েছিলাম? কবে এমনভাবে ভেদাভেদ ভুলে কোটি মানুষের ভালোবাসা এক বিন্দুতে মিলেছিল?

আমরা নানা পথে, নানা মতভেদে বিভক্ত একটি জাতি। খেলাধুলা ছাড়া খুব কম সময়েই আমাদের দেখা মেলে এমন ঐক্যের। অথচ ঐক্যই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি; বিভক্তি আমাদের দুর্বলতা। এ কারণেই স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারিনি।

কিন্তু ইতিহাস বলছে—বাংলাদেশ যখনই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তখনই হয়েছে অপরাজেয়।

বেগম খালেদা জিয়া সেই জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি বহুবার ভেদাভেদ দূর করে জাতিকে এক সুতোয় গেঁথেছেন। যখন বাংলাদেশ স্বৈরশাসনের অন্ধকারে পথ হারিয়েছিল, তখনই তিনি দৃঢ়চিত্তে রাজনীতিতে অবতীর্ণ হন। একজন গৃহিণী থেকে হয়ে ওঠেন জাতির কান্ডারি। সব মত ও পথের মানুষকে একত্র করতে সক্ষম হয়েছিলেন তাঁর অসীম ধৈর্য, দেশপ্রেম ও দূরদর্শিতা দিয়ে। এমনকি যারা তাঁকে সমালোচনা করেছে, তাদেরও সঙ্গে নিয়ে লড়েছেন গণতন্ত্রের জন্য। আপসহীন, অকুতোভয়—বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর সেই অবস্থান এখনো অটল।

১৯৯০-এর স্বৈরাচার পতনের পর জনগণ তাঁকেই নির্বাচিত করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। বিএনপি রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির পক্ষে থাকলেও জাতীয় ঐক্য ও জনগণের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি সংবিধান সংশোধনে রাজি হন এবং দেশে চালু করেন সংসদীয় গণতন্ত্র।
১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রের স্বার্থে তিনি প্রবর্তন করেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা—যা দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি গড়ে দেয়।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য দৃষ্টান্ত। হিংসাত্মক ও কুরুচিপূর্ণ রাজনীতির বিপরীতে তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও মার্জিত। কখনো অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেননি; সবসময় মিতভাষী ও সুশীল আচরণে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারা গড়ে তুলেছেন।
রাজনীতি প্রতিহিংসার পথ নয়—এই বার্তাই তিনি নিজের কর্ম ও চরিত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

যারা তাঁকে কটূক্তি করেছে, যাদের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তিনি বিনা অপরাধে দুই বছরের বেশি সময় কারাবরণ করেছেন—তাদের সম্পর্কেও তিনি কখনো বিষোদ্গার করেননি। এটি তাঁর অনন্য মানবিকতা ও ভদ্রতার পরিচয়, যা আজ তাঁকে আরও উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

এই কারণেই এখন দলমত-নির্বিশেষে মানুষ তাঁর আরোগ্য কামনায় একত্র হয়েছে। বেগম জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বিরল দৃষ্টান্ত—যা আগামী প্রজন্মের জন্য পথনির্দেশক।

দেশবাসীর একটাই আশা—তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশের জন্য, সুস্থ রাজনীতির জন্য, এবং জনগণের স্বার্থে তাঁর প্রয়োজন আজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।