ঢাকা ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিকশাচালকদের মর্যাদা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রমী কর্মশালা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩২ বার পড়া হয়েছে

রিকশাচালকদের জীবনমান উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে রাজধানীর আফতাবনগরে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জীবনমান উন্নয়ন কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পাঁচ শতাধিক রিকশাচালক অংশ নেন।

কর্মশালায় উত্তম আচরণ, পারিবারিক দায়িত্বশীলতা, মাদক ও ধূমপানের ক্ষতি, স্বাস্থ্যসচেতনতা, ট্রাফিক আইন, সড়ক নিরাপত্তা, স্বল্প আয়ে সংসার পরিচালনা, সঞ্চয় এবং ইসলামে শ্রমের মর্যাদা—এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকরা দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেন, “রিকশাচালকরা এই শহরের প্রাণ। আপনাদের চাকা থেমে গেলে নগরের জীবনও থেমে যায়। পেশাগত পরিচয় নয়, মানুষের মর্যাদা নির্ধারণ হয় তাকওয়া ও সৎকর্ম দ্বারা।” তিনি কর্মীদের সততা, আমানতদারিতা, উত্তম চরিত্র এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

ইসলামে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য দেন মিরপুর মসিজদুল জুমা কমপ্লেক্সের খতীব আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। তিনি বলেন, “হারাম উপার্জনের প্রাসাদের চেয়ে হালাল রুজির কুঁড়েঘর শ্রেষ্ঠ। রোদে-ঘামে পরিশ্রমী রিকশাচালকের হালাল আয়ে যে বরকত আছে, তা বিলাসিতায় পাওয়া যায় না।”

রিকশাচালকদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল আলম সুমন। স্বল্প আয়ে সংসার পরিচালনা ও সঞ্চয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ দেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সাব্বির আহম্মেদ।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতে ট্রাফিক আইন বিষয়ে বিশেষ সেশন পরিচালনা করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গুলশান) মো. জিয়াউর রহমান এবং বাড্ডা থানার ওসি হাবিবুর রহমান।

এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে রিকশাচালকরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। রামপুরার এক অংশগ্রহণকারী বলেন, “আমাদের নিয়ে কেউ ভাবেনা। কিন্তু আজ যে সম্মান দিল, তা জীবনে ভুলব না। মনে হচ্ছে আমরাও সমাজের সম্মানিত মানুষ।”

অর্ধদিবসব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য নাস্তা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কর্মশালা শেষে প্রত্যেককে প্রদান করা হয় একটি টি-শার্ট এবং শীতের হুডি। শায়খ আহমাদুল্লাহ ঘোষণা দেন—প্রশিক্ষণের আলোকে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত একজনকে ওমরাহ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, আফতাবনগরে তাদের ৬০০ আসনবিশিষ্ট অডিটোরিয়ামে সারা বছরজুড়ে বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য নিয়মিত জীবনমান উন্নয়ন ও দাওয়াহমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হবে।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদিকে গুলি করে হত্যা: ৫ দফা দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল শনিবার

রিকশাচালকদের মর্যাদা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রমী কর্মশালা

আপডেট সময় ০৯:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

রিকশাচালকদের জীবনমান উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে রাজধানীর আফতাবনগরে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জীবনমান উন্নয়ন কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পাঁচ শতাধিক রিকশাচালক অংশ নেন।

কর্মশালায় উত্তম আচরণ, পারিবারিক দায়িত্বশীলতা, মাদক ও ধূমপানের ক্ষতি, স্বাস্থ্যসচেতনতা, ট্রাফিক আইন, সড়ক নিরাপত্তা, স্বল্প আয়ে সংসার পরিচালনা, সঞ্চয় এবং ইসলামে শ্রমের মর্যাদা—এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকরা দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেন, “রিকশাচালকরা এই শহরের প্রাণ। আপনাদের চাকা থেমে গেলে নগরের জীবনও থেমে যায়। পেশাগত পরিচয় নয়, মানুষের মর্যাদা নির্ধারণ হয় তাকওয়া ও সৎকর্ম দ্বারা।” তিনি কর্মীদের সততা, আমানতদারিতা, উত্তম চরিত্র এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

ইসলামে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য দেন মিরপুর মসিজদুল জুমা কমপ্লেক্সের খতীব আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। তিনি বলেন, “হারাম উপার্জনের প্রাসাদের চেয়ে হালাল রুজির কুঁড়েঘর শ্রেষ্ঠ। রোদে-ঘামে পরিশ্রমী রিকশাচালকের হালাল আয়ে যে বরকত আছে, তা বিলাসিতায় পাওয়া যায় না।”

রিকশাচালকদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল আলম সুমন। স্বল্প আয়ে সংসার পরিচালনা ও সঞ্চয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ দেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সাব্বির আহম্মেদ।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতে ট্রাফিক আইন বিষয়ে বিশেষ সেশন পরিচালনা করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গুলশান) মো. জিয়াউর রহমান এবং বাড্ডা থানার ওসি হাবিবুর রহমান।

এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে রিকশাচালকরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। রামপুরার এক অংশগ্রহণকারী বলেন, “আমাদের নিয়ে কেউ ভাবেনা। কিন্তু আজ যে সম্মান দিল, তা জীবনে ভুলব না। মনে হচ্ছে আমরাও সমাজের সম্মানিত মানুষ।”

অর্ধদিবসব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য নাস্তা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কর্মশালা শেষে প্রত্যেককে প্রদান করা হয় একটি টি-শার্ট এবং শীতের হুডি। শায়খ আহমাদুল্লাহ ঘোষণা দেন—প্রশিক্ষণের আলোকে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত একজনকে ওমরাহ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, আফতাবনগরে তাদের ৬০০ আসনবিশিষ্ট অডিটোরিয়ামে সারা বছরজুড়ে বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য নিয়মিত জীবনমান উন্নয়ন ও দাওয়াহমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হবে।