ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে এক তরুণীকে চীনে পাচারের চেষ্টাকালে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চীনের নাগরিক ঝ্যাং লেইজি (৫৪), হুন ঝুনঝুন (৩০) এবং বাংলাদেশের নয়ন আলী (৩০)।
বুধবার (গতকাল) বিমানবন্দর এপিবিএন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গাইবান্ধার ১৯ বছরের এক তরুণীকে সোমবার রাতে চীনে পাচারের চেষ্টা করে চক্রটি। তরুণীটি শাহজালাল বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথে গোলচত্বর এলাকায় দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে ঝ্যাং লেইজি ও হুন ঝুনঝুনকে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়।
পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ এবং ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে আরও পাচারকারী এবং ভুক্তভোগী নারীরা অবস্থান করছেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় এপিবিএন। সেখান থেকে নয়ন আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়, যদিও অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়।
এপিবিএন জানায়, চীনা নাগরিক ঝ্যাং লেইজি ও হুন ঝুনঝুন প্রায় এক বছর ধরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করছেন এবং স্থানীয় দালালদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। নয়ন আলীর সহযোগিতায় তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করা হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে হুন ঝুনঝুনের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সোমবার জোরপূর্বক তরুণীকে বাসা থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে যান ঝ্যাং লেইজি ও হুন ঝুনঝুন। এ ঘটনায় তরুণীর মা বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বিমানবন্দর এপিবিএনের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোজাম্মেল হক বলেন, “এটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানব পাচারের অভিযোগে চীনের নাগরিক আটকের দ্বিতীয় ঘটনা। একটি আন্তর্জাতিক চক্র স্থানীয় দালালদের সহায়তায় গ্রামাঞ্চলের সহজসরল ও দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের টার্গেট করে চীনে পাচারের চেষ্টা করছে।”
এপিবিএনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পালিয়ে যাওয়া পাচারকারীদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।