ঢাকা ০৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“নেতা আদেশ দিলে দেশ স্থবির হয়ে যাবে”: শামসুজ্জামান দুদু

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:২০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • ৬৩২ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি ডেট দিতে না পারেন, আরেকটু অপেক্ষা করেন, আমরাই ডেট দিয়ে দেবো।”

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) খুলনা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দুদু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা যারা কর্মচারী—পুলিশ, প্রশাসন—দেশের জনগণের টাকায় চলে, অথচ নববধূর মতো আচরণ করেন, তাহলে আমরা কী করবো? এখন পাত্রী আমরা দেখে ফেলেছি, পছন্দও হয়ে গেছে, এখন একটা দিন বলতে হবে। দিন না বললে আমরা দাওয়াত দেব কাকে?”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ড. ইউনূসের বিরোধিতা করিনি। কিন্তু তিনি যদি সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হন, আমরা হবো না। তারেক রহমান এখনো চূড়ান্ত কথা বলেননি। যখন বলবেন, তখন সারা দেশ স্থবির হয়ে যাবে—সেদিন আপনারা বুঝবেন।”

বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “যদি বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকতো, তাহলে এক মাসের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হতো না। আমাদের যে আন্দোলন, তা নিয়ে আমরা গর্ব করি। সেই ২০২৪ সালের আন্দোলনকে যারা ছোট করছে, তারা ইতিহাস না জেনে কথা বলছে। শত শত, না—হাজার হাজার ছোট ভাইবোনকে সহযোগিতার জন্য তারেক রহমান মাঠে পাঠিয়েছেন। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করবে, এটা আমাদের অঙ্গীকার।”

শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘নেতার নেতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছিলেন। তার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে একটি পয়সারও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আগামী দেড়শ বছরেও কেউ তা খুঁজে পাবে না। মৃত্যুর পর তার কোনো সম্পদ ছিল না—না কোনো প্লট, না ব্যাংক ব্যালেন্স। তিনি ছিলেন মানুষের কল্যাণে নিবেদিত একজন রাষ্ট্রনায়ক। রাষ্ট্রপতি হয়েও নিজেকে শ্রমিক পরিচয়ে পরিচিত করাতে গর্ববোধ করতেন।”

সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারব্যবস্থার সমালোচনা করে দুদু বলেন, “ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, আগে তার নিজের সংস্কার দরকার। হাইকোর্ট ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াতে বললেও, তিনি ও তার উপদেষ্টারা সেই আদেশ মানেননি। পদত্যাগ নাটক করেছেন। শেখ হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করছেন।”

তিনি বলেন, “তারেক রহমান বলেছেন—সবার আগে বাংলাদেশ। কিন্তু ড. ইউনূস বলছেন—সবার আগে লাইসেন্স, সবার আগে টাকা। তিনি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হয়ে বিদেশ যাননি, গেছেন ব্যবসার কাজে।”

চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ‘গুপ্ত সংগঠন’ জড়িত দাবি করে শামসুজ্জামান দুদু দ্রুত এসব হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।

জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে তিনি বলেন, “তারা ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তাদের স্ত্রীরাও যদি ভোট দেয়, তা ধানের শীষেই যাবে। তাই নারীসহ সব মানুষের অধিকার আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু প্রমুখ।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ‘ঘি ঢাললেন’ ট্রাম্প: চীন

“নেতা আদেশ দিলে দেশ স্থবির হয়ে যাবে”: শামসুজ্জামান দুদু

আপডেট সময় ০৮:২০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি ডেট দিতে না পারেন, আরেকটু অপেক্ষা করেন, আমরাই ডেট দিয়ে দেবো।”

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) খুলনা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দুদু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা যারা কর্মচারী—পুলিশ, প্রশাসন—দেশের জনগণের টাকায় চলে, অথচ নববধূর মতো আচরণ করেন, তাহলে আমরা কী করবো? এখন পাত্রী আমরা দেখে ফেলেছি, পছন্দও হয়ে গেছে, এখন একটা দিন বলতে হবে। দিন না বললে আমরা দাওয়াত দেব কাকে?”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ড. ইউনূসের বিরোধিতা করিনি। কিন্তু তিনি যদি সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হন, আমরা হবো না। তারেক রহমান এখনো চূড়ান্ত কথা বলেননি। যখন বলবেন, তখন সারা দেশ স্থবির হয়ে যাবে—সেদিন আপনারা বুঝবেন।”

বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “যদি বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকতো, তাহলে এক মাসের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হতো না। আমাদের যে আন্দোলন, তা নিয়ে আমরা গর্ব করি। সেই ২০২৪ সালের আন্দোলনকে যারা ছোট করছে, তারা ইতিহাস না জেনে কথা বলছে। শত শত, না—হাজার হাজার ছোট ভাইবোনকে সহযোগিতার জন্য তারেক রহমান মাঠে পাঠিয়েছেন। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করবে, এটা আমাদের অঙ্গীকার।”

শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘নেতার নেতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছিলেন। তার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে একটি পয়সারও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আগামী দেড়শ বছরেও কেউ তা খুঁজে পাবে না। মৃত্যুর পর তার কোনো সম্পদ ছিল না—না কোনো প্লট, না ব্যাংক ব্যালেন্স। তিনি ছিলেন মানুষের কল্যাণে নিবেদিত একজন রাষ্ট্রনায়ক। রাষ্ট্রপতি হয়েও নিজেকে শ্রমিক পরিচয়ে পরিচিত করাতে গর্ববোধ করতেন।”

সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারব্যবস্থার সমালোচনা করে দুদু বলেন, “ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, আগে তার নিজের সংস্কার দরকার। হাইকোর্ট ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াতে বললেও, তিনি ও তার উপদেষ্টারা সেই আদেশ মানেননি। পদত্যাগ নাটক করেছেন। শেখ হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করছেন।”

তিনি বলেন, “তারেক রহমান বলেছেন—সবার আগে বাংলাদেশ। কিন্তু ড. ইউনূস বলছেন—সবার আগে লাইসেন্স, সবার আগে টাকা। তিনি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হয়ে বিদেশ যাননি, গেছেন ব্যবসার কাজে।”

চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ‘গুপ্ত সংগঠন’ জড়িত দাবি করে শামসুজ্জামান দুদু দ্রুত এসব হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।

জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে তিনি বলেন, “তারা ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তাদের স্ত্রীরাও যদি ভোট দেয়, তা ধানের শীষেই যাবে। তাই নারীসহ সব মানুষের অধিকার আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু প্রমুখ।