পূর্বনির্ধারিত নির্বাচনী গণসংযোগে গিয়ে গুলিবিদ্ধ স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তরুণ রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চলছে জটিল অস্ত্রোপচার।
হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানাচ্ছেন দেশজুড়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে দোয়া ও শুভকামনার ঢল। একই সঙ্গে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে সর্বত্র।
তরুণ আলেম ও জনপ্রিয় বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আল্লাহ তাকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দিন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া লিখেছেন, ‘হাদি ভাইয়ের জন্য দোয়া করুন। সরকার ও ইসি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ডা. আসিফ সৈকত আবেগঘন স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘অভিমান করে থাকা হলো, এখন মনে হচ্ছে বড় ভুল করেছি। সেরে উঠ ভাই আমার।’
জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কণ্ঠ ও ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের সমর্থক ইমরুল হাসান লিখেছেন, ‘হাদিরে গুলি করা মানে জুলাইয়ের বুকে গুলি করা।’
প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন জানান, হাদির এমন পরিস্থিতি দেখা অত্যন্ত কষ্টের।
তরুণ আলেম মনযূরুল হক সরকারের নিরাপত্তা ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘দিনের পর দিন হুমকি পেয়েছে—তবু নিরাপত্তার ব্যবস্থা হলো না। দায় সরকার এড়াতে পারে না।’
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতা সারজিসও সবাইকে দোয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সিনিয়র সাংবাদিক হাসান আদিল সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হাদিকে স্তব্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। ইসলামের হয়ে কথা বলা এখনো নিরাপদ নয়—কিন্তু ভয় দেখিয়ে ইসলামের জাগরণ থামানো যাবে না।’
হাসপাতালে ছুটে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুলাইযোদ্ধা ও এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও অনেকে দোয়া ও সমর্থনের বার্তা দিচ্ছেন। কেউ লিখছেন—
‘হে আল্লাহ, হাদিকে পূর্ণ সুস্থতা দান করুন।’
‘হাদি আপনি পারবেন, আপনাকে পারতেই হবে।’
‘রাষ্ট্রকে অকার্যকর করতে চাওয়া দুষ্টচক্রকে থামানোর সময় এখনই।’
এ হামলায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে নিরাপত্তাহীনতার আলোচনাও শুরু হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরদিনই প্রার্থীকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা নির্বাচনী সহিংসতার শঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা শিগগিরই বিস্তারিত জানাতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দেশজুড়ে একটাই প্রার্থনা—শরিফ ওসমান হাদি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন।




















