জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য জিএম কাদের বলেছেন, “সরকার নির্বাচন দিতে পারবে না। তাদের ইচ্ছাও নেই, ক্ষমতাও নেই। তারা নিজস্ব দল তৈরি করে নির্বাচন দিতে চায়। এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। আমরা এ বিষয়ে নব্বইয়ের দশক থেকেই বারবার বলে আসছি।”
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ নিজ বাসভবন ‘স্কাই ভিউ’-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে একটি দল নির্বাচন চাচ্ছে। আমরাও নির্বাচন চাই, কিন্তু তারা সেটা স্বীকার করছে না। তারা জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। অথচ আমরা নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল, সারা দেশে আমাদের কার্যক্রম রয়েছে। অথচ একটি অনিবন্ধিত দলকে সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।”
সরকারের নীতিকে ‘পৃথকীকরণমূলক’ আখ্যা দিয়ে জিএম কাদের বলেন, “সরকার দেশের একটি বৃহৎ অংশকে রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কোণঠাসা করে রাখছে। এর জন্য কালাকানুন ও আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, যা আমরা তীব্রভাবে প্রতিবাদ করছি।”
জাতীয় পার্টির অতীত ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আমার আপন ভাগ্নে শহীদ হয়েছেন। সেখানেও আমরা জনগণের পক্ষে ছিলাম। শাপলা চত্বরের আন্দোলনে হেফাজতে ইসলামের পাশে ছিলাম, তাদের পানি খাইয়েছি। চব্বিশ সালের ছাত্র আন্দোলনেও আমরা সর্বাত্মকভাবে পাশে ছিলাম।”
বিগত নির্বাচনের প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, “আমরা কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে যেতে চাইনি, কিন্তু আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। এখন আমাদের মিছিল-মিটিং, কাউন্সিল—সবকিছুতেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বিনা চার্জশিটে, বিনা বিচারে জেলে নেওয়া হচ্ছে। এতে গণতন্ত্রের কোনো পরিবেশ নেই।”
তিনি বলেন, “সরকার যদি সঠিক পথে না আসে, তাহলে জনগণকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা নিগৃহীত, অত্যাচারিত, আইনের অপব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত—তাদের একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করতে হবে।”
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, “দেশে বেকারত্ব বাড়ছে, দারিদ্র্যও বাড়ছে। গত ৮-৯ মাসে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছেন না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছে না। এরকম অবস্থায় কেউ দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না।”