সোমবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে কবিরকে গ্রেফতার করে র্যাব। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হয়। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিকানা নিয়ে আদালতে নতুন তথ্য দিয়েছেন আসামি মো. কবির। তার দাবি, মোটরসাইকেলটি তার বন্ধু মাইনুদ্দিন ইসলাম শুভ কিনেছেন। তবে কেনার সময় তার জাতীয় পরিচয়পত্রটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
এ মামলায় পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের সহযোগী মো. কবিরের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
পুলিশ বলছে, ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবির।
এদিন কবিরকে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রিমান্ড শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক কবির এবং তিনি মোটরসাইকেল সরবরাহের মাধ্যমে অপরাধে সহযোগিতা করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
শুনানিতে কবির আদালতকে বলেন, তিনি উবার গাড়ি চালাতেন এবং মাঝেমধ্যে ফয়সাল করিম মাসুদ তাকে ফোন করে গুলশানসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। প্রায় ১৮–২০ দিন আগে ফয়সাল ফোন করে তাকে হাদির অফিসে নিয়ে যেতে বলেন এবং সেখানে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, মোটরসাইকেলটি তার বন্ধু মাইনুদ্দিন ইসলাম শুভ কিনেছেন। তারা দুজন একই দিনে মোটরসাইকেল কিনতে যান। তখন শুভ তার (কবিরের) আইডি কার্ড ব্যবহার করে মোটরসাইকেলটি কেনেন। মোটরসাইকেলের অন্যান্য কাগজপত্র শুভর নামে রয়েছে এবং অনেকদিন আগে সেটি কেনা হয়েছে।
এর আগে সোমবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন এলাকা থেকে কবিরকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এ মামলায় এরই মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার শ্যালিকা মারিয়া আক্তার লিমা এবং শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু পাঁচদিনের রিমান্ডে রয়েছেন। এছাড়া ঘটনার পর ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক দাবি করে আব্দুল হান্নান নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত রোববার আদালতে রিমান্ড শুনানিতে হান্নান বলেছিলেন, আটকের পর তিনি র্যাবকে বলেছিলেন, তাকে শোরুমে নিয়ে যেতে। তাহলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। পরে তিনি পুলিশকেও একই কথা বলেছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল ঘোষণার আগেই হাদি ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পলাতক কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সরকার পতনের পর থেকে প্রকাশ্য ও গোপনে ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নাশকতা, ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা হামলা, অস্ত্র ও গোলাবারুদের জোগান, অনলাইন গুজব ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এর উদ্দেশ্য হলো দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন এবং জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করা।



















