শহীদ প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সিলেট মহানগর বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার প্রকাশ্য বাগবিতণ্ডায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নগরীর দরগাগেট এলাকার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বাগবিতণ্ডায় জড়ান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক চৌধুরী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিবসে দলের সিনিয়র নেতাদের অনুপস্থিতির কারণে প্রকাশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই অনুপস্থিতি দলের ঐক্যের জন্য অশনিসংকেত।”
এর জবাবে সভার সভাপতি রেজাউল লোদী বক্তব্য দিতে উঠে বলেন, “এখানে হলভর্তি নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়। এত মানুষের উপস্থিতির পরও অনুপস্থিতির প্রশ্ন তোলা কতটা যুক্তিযুক্ত?” একই সঙ্গে তিনি ফেসবুক লাইভ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে স্পষ্ট কথা বলার ইঙ্গিত দেন।
তখন হঠাৎ করে আরিফুল হক চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে রেজাউল লোদীর দিকে অগ্রসর হয়ে বলেন, “আমি একটা প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়েছি, আপনি কেন ভিন্ন প্রসঙ্গে যাচ্ছেন?” এরপরই দুজনের মধ্যে সরাসরি বাগবিতণ্ডা শুরু হয়, যা কয়েক মিনিট ধরে চলে।
ঘটনার পর উভয় নেতার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, “সিলেট বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে দুটি বলয় সক্রিয়—একটি আরিফুল হক চৌধুরী এবং অপরটি খন্দকার মুক্তাদির বলয়। এই বলয়ভিত্তিক রাজনীতির কারণে সংগঠন মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আজকের ঘটনাও সেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রকাশ।” তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ না করলে সিলেট বিএনপির ঐক্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।”
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, শাবিপ্রবির সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক শামীমুর রহমানসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।