ঢাকা ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

গত মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। একইসঙ্গে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি বলেছেন, এই চারদিনের সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের ধারেকাছেও যায়নি।

এদিকে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’-এ ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনিল চৌহান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। ব্লুমবার্গকে তিনি বলেন, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কীভাবে সেগুলো ভূপাতিত হলো।

পাকিস্তান দাবি করেছে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনিল চৌহান বলেন, এটি একেবারেই ভুল তথ্য। তবে ভারত কতটি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে তা জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তিনি আরও বলেন, কেন যুদ্ধবিমানগুলো ভূপাতিত হলো, সেখানে কী ভুল ছিল – এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যাটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বলেন, ভালো দিক হলো, আমরা যে কৌশলগত ভুলটি করেছি তা চিহ্নিত করে সংশোধন করেছি এবং দুইদিনের মধ্যে আবার অভিযান চালিয়ে দূর পাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছি। আমাদের সব যুদ্ধবিমান আবারও উড়িয়েছি, দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে তা নির্ভুল আঘাত হানতে পেরেছে।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই দাবির বিষয়ে মন্তব্য জানাতে অস্বীকার করলেও উভয় পক্ষই (ভারত-পাকিস্তান) পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে দূরে ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রচলিত যুদ্ধ এবং পারমাণবিক যুদ্ধের মধ্যে পার্থক্য আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ চ্যানেল সবসময় খোলা ছিল।

চৌহানের দাবি, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে যে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে, তার বাস্তব ফল ছিল না। চীনের অস্ত্র ও প্রযুক্তি কাজ করেনি। জেনারেল চৌহান জানান, আপাতত সংঘর্ষ বন্ধ রয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা আমাদের স্পষ্ট ‘রেড লাইন’ ঠিক করে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ মে কাশ্মীরে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।

তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দাবি, গত ৭ মে রাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর জবাবে তারা ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে; যার মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান, রাশিয়ার তৈরি একটা মিগ-২৯ ও একটা এসইউ-৩০। দুই দেশের মধ্যে চলমান এই সংঘর্ষকে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে ইসিতে পৌঁছেছে আদালতের আদেশ, সোমবার হতে পারে সিদ্ধান্ত

অবশেষে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

আপডেট সময় ০৪:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

গত মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। একইসঙ্গে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি বলেছেন, এই চারদিনের সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের ধারেকাছেও যায়নি।

এদিকে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’-এ ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনিল চৌহান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। ব্লুমবার্গকে তিনি বলেন, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কীভাবে সেগুলো ভূপাতিত হলো।

পাকিস্তান দাবি করেছে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনিল চৌহান বলেন, এটি একেবারেই ভুল তথ্য। তবে ভারত কতটি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে তা জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তিনি আরও বলেন, কেন যুদ্ধবিমানগুলো ভূপাতিত হলো, সেখানে কী ভুল ছিল – এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যাটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বলেন, ভালো দিক হলো, আমরা যে কৌশলগত ভুলটি করেছি তা চিহ্নিত করে সংশোধন করেছি এবং দুইদিনের মধ্যে আবার অভিযান চালিয়ে দূর পাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছি। আমাদের সব যুদ্ধবিমান আবারও উড়িয়েছি, দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে তা নির্ভুল আঘাত হানতে পেরেছে।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই দাবির বিষয়ে মন্তব্য জানাতে অস্বীকার করলেও উভয় পক্ষই (ভারত-পাকিস্তান) পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে দূরে ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রচলিত যুদ্ধ এবং পারমাণবিক যুদ্ধের মধ্যে পার্থক্য আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ চ্যানেল সবসময় খোলা ছিল।

চৌহানের দাবি, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে যে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে, তার বাস্তব ফল ছিল না। চীনের অস্ত্র ও প্রযুক্তি কাজ করেনি। জেনারেল চৌহান জানান, আপাতত সংঘর্ষ বন্ধ রয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা আমাদের স্পষ্ট ‘রেড লাইন’ ঠিক করে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ মে কাশ্মীরে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।

তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দাবি, গত ৭ মে রাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর জবাবে তারা ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে; যার মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান, রাশিয়ার তৈরি একটা মিগ-২৯ ও একটা এসইউ-৩০। দুই দেশের মধ্যে চলমান এই সংঘর্ষকে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।