এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ‘টেমু সংস্করণ’ বলে ব্যঙ্গ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি। তিনি বলেছেন, মোদি হচ্ছেন নেতানিয়াহুর মতো, তবে কমদামী বা সস্তা সংস্করণ। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে মোদিকে ‘কাশ্মিরের কসাই’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি। বুধবার (৪ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
মূলত টেমু (Temu) হচ্ছে চীনের জনপ্রিয় একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস, যেখানে খুব সস্তা দামে পণ্য পাওয়া যায় — কিন্তু অনেক সময়ই সেগুলো হয় কম মানের বা মূল পণ্যের নিম্নমানের অনুকরণ। আর তাই কাউকে “টেমু ভার্সন” বলার মানে হচ্ছে— তিনি আসল ব্যক্তির অনুকরণ, কিন্তু মানহীন বা গুণে-মানেও পিছিয়ে। কম দামী ও কম মানের কপি বোঝাতেই এই তুলনাটি করা হয়।
দ্য ডন বলছে, জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল বলেন, “মোদি হচ্ছেন নেতানিয়াহুর মতো, তবে কমদামী সংস্করণ — যেমনটা টেমুতে পাওয়া যায়। আমরা ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা নেতানিয়াহুর মতো নেতিবাচক উদাহরণ অনুসরণ না করে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারত ইসরায়েলের খারাপ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে। মোদিকে ‘কাশ্মিরের কসাই’ আখ্যায়িত করে বিলাওয়াল বলেন, “মোদি কাশ্মিরের মতো সিন্ধু উপত্যকাতেও একই রকম দমননীতির চেষ্টা করছেন।” একই অনুষ্ঠানে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, পাকিস্তান ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইএসআই’ এবং ‘র’ যদি একসাথে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে সন্ত্রাস কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, “যদি এই দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা একসাথে বসে কাজ করে, তাহলে ভারতের মাটিতে এবং পাকিস্তানেও সন্ত্রাস অনেক কমে যাবে।”
বিলাওয়াল আরও বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা এখনও বিদ্যমান। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় সম্পৃক্ততা জরুরি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যস্থতার কথাও উল্লেখ করেন যাদের প্রচেষ্টায় গত মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে তিনি একে ‘শুধু সূচনা’ হিসেবেই বর্ণনা করেন।
বিলাওয়াল বলেন, “সংলাপ ও কূটনৈতিক পথই একমাত্র টেকসই সমাধান। পাকিস্তান এখনো সন্ত্রাসবিরোধী ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।” পাকিস্তানের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানের পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি কার্যকর করে, তবে তা হবে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন এবং এটিকে পাকিস্তান সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখবে।
বিলাওয়াল বলেন, “২০ কোটি মানুষের পানি বন্ধ করার হুমকি দেওয়া একটি বিপজ্জনক কাজ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তা অপরাধ।” সংবাদ সম্মেলনের আগে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ক্যারোলিন রডরিগেজ-বার্কেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারতের “একতরফা আগ্রাসন” ইস্যু তুলে ধরে।