ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠি পাননি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস: প্রেসসচিব

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখনো যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

রবিবার (৮ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি জানান, “টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি এখনো আমাদের কাছে পৌঁছেনি। ৫ জুন থেকে আমরা ছুটিতে রয়েছি।”

এর আগে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, লন্ডন সফররত ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে তাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন টিউলিপ। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ নিয়ে তৈরি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করার কথা উল্লেখ করেন।

চিঠিতে টিউলিপ লেখেন, “লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি সাক্ষাৎ হয়, তাহলে আমার খালার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের বিষয়ে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার সুযোগ পাব।”

টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেন, তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট থেকে এক দশকের বেশি সময় ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। “বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও আমি সেখানে জন্মাইনি, বাস করি না, এমনকি কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থও আমার নেই,”—বলেন তিনি।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, টিউলিপ ও তার মা শেখ রেহানা ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় ৭,২০০ বর্গফুটের একটি প্লট অবৈধভাবে লাভ করেছেন, যা ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে টিউলিপ ও তার আইনজীবীরা অভিযোগগুলো ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো জবাব মেলেনি। “বরং দুদক একটি অজানা ঠিকানায় কাগজপত্র পাঠাচ্ছে এবং এই তথাকথিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে,”—বলেন টিউলিপ।

তিনি আরও বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারবেন, এসব অভিযোগ কিভাবে আমার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালনে এবং দেশের প্রতি আমার অঙ্গীকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।”

উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও, টিউলিপ বিতর্ক এড়িয়ে লেবার পার্টি সরকারের প্রতি বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন।

তদন্তে টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিক সম্পদের প্রমাণ মেলেনি, তবে উপদেষ্টা ম্যাগনেস সতর্ক করেন, তার পরিবারের বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র তার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে। মস্কো সফর এবং কিছু মিডিয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।

অন্যদিকে, ড. ইউনূস বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফরে রয়েছেন। সফরকালে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে “কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” গ্রহণ করবেন এবং চ্যাথাম হাউসে এক আলোচনায় অংশ নেবেন। তার ব্রিটিশ রাজপরিবার ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ নির্ধারিত রয়েছে।

তবে টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো চিঠি নিয়ে এখন পর্যন্ত ড. ইউনূস কোনো মন্তব্য করেননি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর অজ্ঞাত স্থানে নেতানিয়াহু, নিহত ইরানের শীর্ষ জেনারেলরা

টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠি পাননি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস: প্রেসসচিব

আপডেট সময় ০৮:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখনো যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

রবিবার (৮ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি জানান, “টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি এখনো আমাদের কাছে পৌঁছেনি। ৫ জুন থেকে আমরা ছুটিতে রয়েছি।”

এর আগে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, লন্ডন সফররত ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে তাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন টিউলিপ। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ নিয়ে তৈরি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করার কথা উল্লেখ করেন।

চিঠিতে টিউলিপ লেখেন, “লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি সাক্ষাৎ হয়, তাহলে আমার খালার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের বিষয়ে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার সুযোগ পাব।”

টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেন, তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট থেকে এক দশকের বেশি সময় ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। “বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও আমি সেখানে জন্মাইনি, বাস করি না, এমনকি কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থও আমার নেই,”—বলেন তিনি।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, টিউলিপ ও তার মা শেখ রেহানা ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় ৭,২০০ বর্গফুটের একটি প্লট অবৈধভাবে লাভ করেছেন, যা ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে টিউলিপ ও তার আইনজীবীরা অভিযোগগুলো ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো জবাব মেলেনি। “বরং দুদক একটি অজানা ঠিকানায় কাগজপত্র পাঠাচ্ছে এবং এই তথাকথিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে,”—বলেন টিউলিপ।

তিনি আরও বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারবেন, এসব অভিযোগ কিভাবে আমার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালনে এবং দেশের প্রতি আমার অঙ্গীকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।”

উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও, টিউলিপ বিতর্ক এড়িয়ে লেবার পার্টি সরকারের প্রতি বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন।

তদন্তে টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিক সম্পদের প্রমাণ মেলেনি, তবে উপদেষ্টা ম্যাগনেস সতর্ক করেন, তার পরিবারের বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র তার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে। মস্কো সফর এবং কিছু মিডিয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।

অন্যদিকে, ড. ইউনূস বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফরে রয়েছেন। সফরকালে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে “কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” গ্রহণ করবেন এবং চ্যাথাম হাউসে এক আলোচনায় অংশ নেবেন। তার ব্রিটিশ রাজপরিবার ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ নির্ধারিত রয়েছে।

তবে টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো চিঠি নিয়ে এখন পর্যন্ত ড. ইউনূস কোনো মন্তব্য করেননি।