ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার এজেন্ডা মুখ থুবড়ে পড়েছে, সরকার পড়েছে গভীর শাসন সংকটে”—জিল্লুর রহমান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০২:৩২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • ৫৩৩ বার পড়া হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। একটি ইউটিউব ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, দেশে এখন একটি গভীর শাসন সংকট চলছে, যেখানে প্রশাসনিক অচলাবস্থা, আমলাতান্ত্রিক প্রতিরোধ, রাজনৈতিক অনাস্থা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি একসঙ্গে ক্রিয়াশীল।

তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির নবনির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও, সরকার “আইনি জটিলতার অজুহাতে” তা বিলম্বিত করছে। এতে শুধুমাত্র একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাংবিধানিক অধিকারই লঙ্ঘিত হচ্ছে না, বরং সিটি কর্পোরেশনের স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।

একই সময়ে সচিবালয়ে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫-এর বিরুদ্ধে কর্মবিরতি, আন্দোলন ও বিক্ষোভে নেমেছেন। এনবিআর, পল্লী বিদ্যুৎ, চট্টগ্রাম বন্দর এবং সিভিল সার্ভিসের অন্তত ২৫টি ক্যাডার সংগঠন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলনে শামিল হয়েছে।

জিল্লুর রহমান মন্তব্য করেন, অতীতে কখনোই আমলাতন্ত্র এতটা সংঘবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। এটি সরকারের জন্য গভীর সংকেত।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি বর্তমানে কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে। ভার্চুয়াল বক্তৃতা, তারুণ্যকেন্দ্রিক কর্মসূচি এবং নির্বাচন আদায়ের দাবিতে সরকারকে রাজনৈতিক চাপে রাখছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নির্বাচন আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি ও তাদের জোট এতে আস্থাহীনতা প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা, রাজনৈতিক রোডম্যাপের অভাব এবং নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা দেশে একটি রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করেছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর জনবহুল এলাকায় খুন, ছিনতাই, সশস্ত্র হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে। কিন্তু পুলিশের প্রতিক্রিয়া প্রায় অনুপস্থিত। এমনকি রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর নতুন দায়িত্ব বণ্টন হলেও তা বাস্তবে প্রয়োগ করা যায়নি।

এই প্রেক্ষাপটে জিল্লুর রহমান সরকারের সামনে দুইটি পথ দেখান:

  1. প্রশাসনিক ও আইনগতভাবে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন রোডম্যাপ প্রকাশ করা, যাতে সংস্কার ও নিরাপত্তা বিষয়ে জনগণ স্পষ্ট বার্তা পায়।
  2. রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও সমঝোতা বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা পুনর্গঠন করা।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সরকারের রাজনৈতিক মূলধন ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা, আমলাতন্ত্রের প্রতিরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি বহুমাত্রিক শাসন সংকটে পড়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই সনদ ছাড়া নির্বাচন নয়”—তারেক-ইউনূস বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ

সংস্কার এজেন্ডা মুখ থুবড়ে পড়েছে, সরকার পড়েছে গভীর শাসন সংকটে”—জিল্লুর রহমান

আপডেট সময় ০২:৩২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। একটি ইউটিউব ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, দেশে এখন একটি গভীর শাসন সংকট চলছে, যেখানে প্রশাসনিক অচলাবস্থা, আমলাতান্ত্রিক প্রতিরোধ, রাজনৈতিক অনাস্থা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি একসঙ্গে ক্রিয়াশীল।

তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির নবনির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও, সরকার “আইনি জটিলতার অজুহাতে” তা বিলম্বিত করছে। এতে শুধুমাত্র একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাংবিধানিক অধিকারই লঙ্ঘিত হচ্ছে না, বরং সিটি কর্পোরেশনের স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।

একই সময়ে সচিবালয়ে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫-এর বিরুদ্ধে কর্মবিরতি, আন্দোলন ও বিক্ষোভে নেমেছেন। এনবিআর, পল্লী বিদ্যুৎ, চট্টগ্রাম বন্দর এবং সিভিল সার্ভিসের অন্তত ২৫টি ক্যাডার সংগঠন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলনে শামিল হয়েছে।

জিল্লুর রহমান মন্তব্য করেন, অতীতে কখনোই আমলাতন্ত্র এতটা সংঘবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। এটি সরকারের জন্য গভীর সংকেত।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি বর্তমানে কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে। ভার্চুয়াল বক্তৃতা, তারুণ্যকেন্দ্রিক কর্মসূচি এবং নির্বাচন আদায়ের দাবিতে সরকারকে রাজনৈতিক চাপে রাখছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নির্বাচন আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি ও তাদের জোট এতে আস্থাহীনতা প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা, রাজনৈতিক রোডম্যাপের অভাব এবং নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা দেশে একটি রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করেছে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর জনবহুল এলাকায় খুন, ছিনতাই, সশস্ত্র হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে। কিন্তু পুলিশের প্রতিক্রিয়া প্রায় অনুপস্থিত। এমনকি রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর নতুন দায়িত্ব বণ্টন হলেও তা বাস্তবে প্রয়োগ করা যায়নি।

এই প্রেক্ষাপটে জিল্লুর রহমান সরকারের সামনে দুইটি পথ দেখান:

  1. প্রশাসনিক ও আইনগতভাবে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন রোডম্যাপ প্রকাশ করা, যাতে সংস্কার ও নিরাপত্তা বিষয়ে জনগণ স্পষ্ট বার্তা পায়।
  2. রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও সমঝোতা বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা পুনর্গঠন করা।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সরকারের রাজনৈতিক মূলধন ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা, আমলাতন্ত্রের প্রতিরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি বহুমাত্রিক শাসন সংকটে পড়েছে।