ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে, আহত হয়েছেন বহু। হতাহতদের মধ্যে রয়েছেন রাজস্থানের অন্তত ১১ জন।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন খুশবু রাজপুরোহিত নামে এক নববধূ। রাজস্থানের বালোতারা বিভাগের আরাবা গ্রামের এই তরুণী প্রথমবারের মতো তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যাচ্ছিলেন। কয়েক মাস আগেই তার বিয়ে হয় লন্ডনপ্রবাসী এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। কিন্তু বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার নতুন জীবনের স্বপ্ন থেমে যায়।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বিমানটি উড্ডয়নের পর সর্বোচ্চ ৮২৫ ফুট পর্যন্ত উঠেছিল। এরপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি হঠাৎ নেমে আসতে শুরু করে এবং দ্রুতই মাটিতে আছড়ে পড়ে। এর ঠিক আগমুহূর্তে সহ-পাইলট ‘মে ডে’ কল দিয়ে জরুরি সহায়তা চান। তবে এরপর আর বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং কালো ধোঁয়া আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিমানের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আহমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে, যেখানে পাঁচ শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার পরপরই যাত্রীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, বিধ্বস্ত এআই ১৭১ ফ্লাইটে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, কানাডার ১ জন ও পর্তুগালের ৭ জন নাগরিক ছিলেন।
ফ্লাইটটিতে রাজস্থানের ১১ জন আরোহী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে দুজন যুক্তরাজ্যে শেফ হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার খবরে রাজস্থানের আরাবা গ্রামসহ পুরো এলাকা শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ভারতের বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যান্ত্রিক ত্রুটিই এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ।