ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“জাতীয় স্বার্থে ড. ইউনূসের প্রয়োজন আছে” — তারেক রহমান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
  • ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যদি আসন্ন নির্বাচনে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে, তাহলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্র পরিচালনায় পরামর্শকের ভূমিকায় যুক্ত করা হবে—এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডনে এক ঘরোয়া বৈঠকে তিনি বলেন, “জাতীয় স্বার্থে ড. ইউনূসের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য।”

বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তারেক রহমানের পররাষ্ট্র‑বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আগামী নির্বাচন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নির্বাচনের পরে ৩১ দফা রূপরেখা অনুযায়ী “অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র গঠন”।

তারেক রহমানের মন্তব্য
“বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা মানুষদের—বিশেষত ড. ইউনূসের—জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রাষ্ট্রের উন্নয়নে প্রয়োগ করতে চাই। জনগণ যদি আমাদের দায়িত্ব দেয়, আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করব।”

এর মাত্র দু’দিন আগে লন্ডনের প্রভাবশালী থিঙ্ক‑ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউস–এ এক সংলাপে ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচনের পরে গঠিত সরকারে অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আমার কাজ হবে কেবল শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা।”
তারেক রহমানের বক্তব্য সেই অবস্থানের বিপরীতে গেলেও তিনি মনে করেন, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে ড. ইউনূসের ভূমিকার ধরন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের হুমায়ুন কবির জানান, বৈঠকটি “অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও আন্তরিক” ছিল।

“দেশকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়—তা নিয়েই বেশি কথা হয়েছে,”—হুমায়ুন কবির।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারেক রহমান এবং ড. ইউনূস—দু’জনেই দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় তাদের সমন্বয় সরকার‑গঠনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে ড. ইউনূসের ‘নিরপেক্ষ ভুমিকা’ ও তারেক রহমানের ‘দলীয় প্রস্তাব’ বাস্তবে কীভাবে মিশে যায়, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের ফল ও পরবর্তী আলোচনা‑প্রক্রিয়ার ওপর।

পটভূমি

  • বিএনপি ইতিমধ্যেই ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে, যাতে “সবার অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা” গড়ার কথা আছে।

  • ড. ইউনূস, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন।

  • আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত আছে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে; বিরোধী দলগুলো শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটের দাবি জানাচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লন্ডনের এই যোগাযোগ ভবিষ্যৎ সরকার‑গঠনে একটি “টেকনোক্র্যাটিক ছায়া‑টিম” গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্ত্বে বিএনপি আগামী দিনে ‘জাতীয় সরকার’‑ধরনের ফর্মুলায় গুছিয়ে নিতে পারে, যেখানে ড. ইউনূসের মতো আন্তর্জাতিক সুনামধন্য ব্যক্তিরা নীতি‑নির্ধারণী স্তরে ভূমিকা রাখবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যে সর্বনাশা মোড়: পারমাণবিক অস্ত্র প্রকাশের দ্বারপ্রান্তে ইরান, চার পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রকাশ্য সমর্থন

“জাতীয় স্বার্থে ড. ইউনূসের প্রয়োজন আছে” — তারেক রহমান

আপডেট সময় ১০:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যদি আসন্ন নির্বাচনে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে, তাহলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্র পরিচালনায় পরামর্শকের ভূমিকায় যুক্ত করা হবে—এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডনে এক ঘরোয়া বৈঠকে তিনি বলেন, “জাতীয় স্বার্থে ড. ইউনূসের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য।”

বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তারেক রহমানের পররাষ্ট্র‑বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আগামী নির্বাচন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নির্বাচনের পরে ৩১ দফা রূপরেখা অনুযায়ী “অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র গঠন”।

তারেক রহমানের মন্তব্য
“বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা মানুষদের—বিশেষত ড. ইউনূসের—জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রাষ্ট্রের উন্নয়নে প্রয়োগ করতে চাই। জনগণ যদি আমাদের দায়িত্ব দেয়, আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করব।”

এর মাত্র দু’দিন আগে লন্ডনের প্রভাবশালী থিঙ্ক‑ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউস–এ এক সংলাপে ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচনের পরে গঠিত সরকারে অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আমার কাজ হবে কেবল শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা।”
তারেক রহমানের বক্তব্য সেই অবস্থানের বিপরীতে গেলেও তিনি মনে করেন, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে ড. ইউনূসের ভূমিকার ধরন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের হুমায়ুন কবির জানান, বৈঠকটি “অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও আন্তরিক” ছিল।

“দেশকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়—তা নিয়েই বেশি কথা হয়েছে,”—হুমায়ুন কবির।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারেক রহমান এবং ড. ইউনূস—দু’জনেই দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় তাদের সমন্বয় সরকার‑গঠনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে ড. ইউনূসের ‘নিরপেক্ষ ভুমিকা’ ও তারেক রহমানের ‘দলীয় প্রস্তাব’ বাস্তবে কীভাবে মিশে যায়, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের ফল ও পরবর্তী আলোচনা‑প্রক্রিয়ার ওপর।

পটভূমি

  • বিএনপি ইতিমধ্যেই ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে, যাতে “সবার অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা” গড়ার কথা আছে।

  • ড. ইউনূস, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন।

  • আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত আছে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে; বিরোধী দলগুলো শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটের দাবি জানাচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লন্ডনের এই যোগাযোগ ভবিষ্যৎ সরকার‑গঠনে একটি “টেকনোক্র্যাটিক ছায়া‑টিম” গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্ত্বে বিএনপি আগামী দিনে ‘জাতীয় সরকার’‑ধরনের ফর্মুলায় গুছিয়ে নিতে পারে, যেখানে ড. ইউনূসের মতো আন্তর্জাতিক সুনামধন্য ব্যক্তিরা নীতি‑নির্ধারণী স্তরে ভূমিকা রাখবেন।