ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত আরও উত্তপ্ত আকার ধারণ করেছে। সামরিক উত্তেজনার পাশাপাশি এবার কূটনৈতিক অঙ্গনেও বড় ধরণের অচলাবস্থার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, হামলা বন্ধ না হলে তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আর কোনও আলোচনা করবে না।
শনিবার (২১ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান। তবে আরাগচি সাফ জানিয়ে দেন—
“ইসরায়েলের আগ্রাসন চলতে থাকলে কূটনৈতিক আলোচনার কোনও সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন,
“ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে কোনো আপস করা হবে না।”
এদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এয়াল জামির হুঁশিয়ার করে বলেছেন,
“ইরানের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সামনে কঠিন সময় আসছে।”
তিনি জানান, ইসরায়েল নতুন করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম ও উৎক্ষেপণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কেন্দ্রীয় ইসরায়েল ও হাইফায় হামলা চালায়। হাইফায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে এক নারী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এই নিয়ে ইসরায়েলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
তেল আবিবের কাছে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং একটি ভবনে আগুন ধরে যায় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, তারা গত সপ্তাহে ইরানের সামরিক স্থাপনা, অস্ত্র মজুত কেন্দ্র ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যাতে একাধিক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এসব হামলায় কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই সংখ্যা ৬৩৯ ছাড়িয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও বহু মানুষ।