ঢাকা ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের আগ্রাসনেই সংঘাতের সূচনা, পারমাণবিক অস্ত্র ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা: কুইন্সি ইনস্টিটিউট

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ সামরিক আগ্রাসনের পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে—বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফট সতর্ক করেছে, এই সংঘাতের পথ অবলম্বন করলে পারমাণবিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়বে এবং যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি অনিয়ন্ত্রিত যুদ্ধজালে জড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাইটা পারসি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইরান যে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে যাচ্ছে, তার বিন্দুমাত্র প্রমাণও নেই। তিনি বলেন, “এটা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য কোনো হুমকি ছিল না, খুব শিগগিরই এরকম কোনো হুমকিতেও পড়ত না তারা।”

তিনি আরও বলেন, “বাস্তবতা হলো—এখানে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ (যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল) একটি পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশকে আক্রমণ করেছে, অথচ তাদের কেউই প্রথমে কোনো হামলার শিকার হয়নি। ইরান যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েল—কারও ওপরই আগ্রাসন চালায়নি। বরং এই সংঘাত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।”

ট্রাইটা পারসি সতর্ক করেন, এই হামলা বিশ্বজুড়ে ‘শকওয়েভ’ তৈরি করবে। কারণ, যেসব দেশ মার্কিন কিংবা ইসরায়েলি হুমকির আশঙ্কায় আছে, তারা এখন পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা ছাড়া নিজেদের নিরাপদ মনে করবে না। তিনি বলেন, “আমার আশঙ্কা, আমরা পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার দেখতে পাব। তবে এও মনে করি, এই হামলা নিশ্চিত করে দিয়েছে—আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।”

একই বিষয়ে কুইন্সি ইনস্টিটিউটের মধ্যপ্রাচ্য প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক অ্যাডাম ওয়াইনস্টিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও ঐচ্ছিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে।

তিনি বলেন, “ইরান এরই মধ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এখন তারা আরও গোপনে কাজ করবে। তারা এনপিটি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তখন ইসরায়েল বলবে, দেখো, এজন্যই আরও হামলা প্রয়োজন।”

ওয়াইনস্টিন আরও বলেন, “ইরান কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালে জনগণের কাছে সরকারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। আর সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন সংঘাতের চক্র। আমার বিশ্বাস, এই হামলা এখানেই শেষ হবে না।”

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই আ’ন্দোলনে ক্ষতি’গ্রস্ত প্রবা’সীদের স্বী’কৃতি ও মু’ক্তির দাবি, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন থেকে ক্ষো’ভ নিয়ে ফিরলেন আন্দো’লনকারীরা

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের আগ্রাসনেই সংঘাতের সূচনা, পারমাণবিক অস্ত্র ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা: কুইন্সি ইনস্টিটিউট

আপডেট সময় ০৪:১৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ সামরিক আগ্রাসনের পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে—বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফট সতর্ক করেছে, এই সংঘাতের পথ অবলম্বন করলে পারমাণবিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়বে এবং যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি অনিয়ন্ত্রিত যুদ্ধজালে জড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাইটা পারসি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইরান যে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে যাচ্ছে, তার বিন্দুমাত্র প্রমাণও নেই। তিনি বলেন, “এটা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য কোনো হুমকি ছিল না, খুব শিগগিরই এরকম কোনো হুমকিতেও পড়ত না তারা।”

তিনি আরও বলেন, “বাস্তবতা হলো—এখানে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ (যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল) একটি পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশকে আক্রমণ করেছে, অথচ তাদের কেউই প্রথমে কোনো হামলার শিকার হয়নি। ইরান যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েল—কারও ওপরই আগ্রাসন চালায়নি। বরং এই সংঘাত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।”

ট্রাইটা পারসি সতর্ক করেন, এই হামলা বিশ্বজুড়ে ‘শকওয়েভ’ তৈরি করবে। কারণ, যেসব দেশ মার্কিন কিংবা ইসরায়েলি হুমকির আশঙ্কায় আছে, তারা এখন পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা ছাড়া নিজেদের নিরাপদ মনে করবে না। তিনি বলেন, “আমার আশঙ্কা, আমরা পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার দেখতে পাব। তবে এও মনে করি, এই হামলা নিশ্চিত করে দিয়েছে—আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।”

একই বিষয়ে কুইন্সি ইনস্টিটিউটের মধ্যপ্রাচ্য প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক অ্যাডাম ওয়াইনস্টিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও ঐচ্ছিক যুদ্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে।

তিনি বলেন, “ইরান এরই মধ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এখন তারা আরও গোপনে কাজ করবে। তারা এনপিটি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তখন ইসরায়েল বলবে, দেখো, এজন্যই আরও হামলা প্রয়োজন।”

ওয়াইনস্টিন আরও বলেন, “ইরান কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালে জনগণের কাছে সরকারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। আর সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন সংঘাতের চক্র। আমার বিশ্বাস, এই হামলা এখানেই শেষ হবে না।”