মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে—যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের দাবি সামনে আসার পর এবার পাল্টা প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করল তেহরান। একযোগে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবকে লক্ষ্য করে জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর নবনিযুক্ত চিফ অব স্টাফ আবদুর রহিম মোসাভি এক কড়া বিবৃতিতে বলেন,
“অবৈধ ও আগ্রাসী সন্তান ইসরায়েলের শাস্তির পাশাপাশি, ইসলামের যোদ্ধাদের হাত এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও সামরিক ঘাঁটির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে মুক্ত। আমরা এক ইঞ্চিও পিছু হটবো না।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে নতুন হামলার পূর্বাভাস দিতে পারে। ইরানের কৌশলগত প্রতিক্রিয়া সীমিত থাকবে না—এমন ইঙ্গিত স্পষ্ট।
রাজনৈতিক মহলেও যুদ্ধংদেহী অবস্থান দৃশ্যমান। ইরানি পার্লামেন্টে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT) থেকে সরে আসা এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে একটি প্রস্তাব তুলতে যাচ্ছেন একাধিক সংসদ সদস্য।
তাদের বক্তব্য, “যখন আমাদের স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে হামলা হচ্ছে, তখন আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সংস্থার সঙ্গে একতরফা সহযোগিতা অর্থহীন।”
তবে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।
একইসঙ্গে হরমুজ প্রণালী—বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি চলাচলের পথ—বন্ধ করার প্রস্তাবও উঠে এসেছে। এটা কার্যকর হলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে ইরান একাধিক ইসরায়েলি সামরিক ও অবকাঠামো স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। পরপর বেশ কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণে বিদ্যুৎকেন্দ্র, সেনাঘাঁটি ও রাডার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তেহরান বলছে, এটি প্রতিশোধের শুরু মাত্র।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য শক্তিগুলোও নিজ নিজ সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।