সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে আলোচনার ঝড় তুলেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ার ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বেকিমোড়া পাড় এলাকায় জামায়াতের প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের পাশে বসে বক্তব্য দিচ্ছেন উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কালা মিয়া।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে এক ঘরোয়া বৈঠকে। ভিডিওতে কালা মিয়াকে বলতে শোনা যায়, “আওয়ামী লীগ সরকার যদি আবার আসতে চায়, তাহলে ১০ থেকে ১৫ বছরের আগে সম্ভব না। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব (জয়নাল আবেদীন) এমপি পদপ্রার্থী হইছেন। যদি পাস করেন, এলাকার মানুষের মূল্যায়ন হবে। আর না পারলেও, এমপি প্রার্থী হিসেবে মূল্যায়ন পাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই আমাদের সেন্টারে জামায়াত ফিফটি ভোট পাক, আর বিএনপি ফিফটি পাক। তারা আগে পায়নি, এবার যেন পায়।”
বক্তব্যে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে বলেন, “এরা কতটা সিট পাবে, তা নিজেরাও জানে না।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কালা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “আমি তো ভোট চাইনি, শুধু বক্তব্য দিয়েছি। আমাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমরা তো নির্যাতিত, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধ। জয়নাল ভাইকে বলেছি, আপনি যদি ইনসাফ করতে পারেন, তাহলে জামায়াতকে ভোট দেব।”
তিনি আরও বলেন, “আমার জামায়াতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা আছে।”
তবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ফয়জুর রহমান বলেন, “সেদিন আমার ছোট ভাইয়ের বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে গিয়েছিলাম। সেখানে কালা মিয়া জামায়াতের পক্ষে ভোট চান। কে বা কারা ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। তবে এখনো তিনি জামায়াতে যোগ দেননি।”
এই বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করা হলেও জামায়াতের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ফোন রিসিভ করেননি।
এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিতে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য নজিরবিহীন বলেই মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।