ঢাকা ০১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন প্লাজমা ডিভাইস আবিষ্কার করলেন ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৪:৫০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • ৫২০ বার পড়া হয়েছে

এবার সারফেস ডাইলেক্ট্রিক ব্যারিয়ার ডিসচার্জ (এসডিবিডি) পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি প্লাজমা ডিভাইস তৈরিতে সফল হয়েছেন ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এই প্রযুক্তিটি উদ্ভাবনে কাজ করে ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট। তবে, এই গবেষণার প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকা পরমাণু বিজ্ঞানী গেল ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে দখলদারদের হামলায় নিহত হন।

বর্তমান বিশ্বে পারমাণবিক শক্তি কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই একটি সক্ষম উৎস হিসেবে বিবেচিত হয় না, বরং চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প এবং পরিবেশসহ বিভিন্ন বিজ্ঞানের অগ্রগতিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন।

নতুন আবিষ্কৃত ডিভাইসটি এমন একটি প্রযুক্তি যা বায়ুমণ্ডলীয় চাপে প্লাজমা তৈরির মাধ্যমে সারফেস পরিবর্তন, জীবাণুমুক্তকরণ এবং চিকিৎসা শিল্পে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্লাজমা প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং শক্তি খরচ কমাতে এ ধরনের একটি ব্যবস্থা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে। এছাড়াও এই পদ্ধতির প্রক্রিয়াগুলো সহজেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং অন্যান্য নিম্ন-চাপের প্লাজমা উৎপাদন পদ্ধতির তুলনায় প্রক্রিয়াকরণ খরচ অনেকটাই কম।

এই ব্যবস্থার মাধ্যমে উৎপাদিত ঠান্ডা প্লাজমা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা, দন্তচিকিৎসা, পৃষ্ঠতল জীবাণুমুক্তকরণ, মুদ্রণ ও প্যাকেজিং শিল্প, শিল্প ওজোন উৎপাদন, বস্ত্র, খাদ্য শিল্প এবং কৃষি।

যন্ত্রটি উন্নত প্রযুক্তিগত নকশা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন প্রধান এবং ইরানের একজন বিশিষ্ট পারমাণবিক ব্যক্তিত্ব আমির হোসেইন ফাগিহির অধীনে কর্মরত গবেষকদের প্রচেষ্টার ফলাফল। ইসরায়েলের হামলায় তেহরানে নিহত হওয়ার আগে তিনি এই গবেষণাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

প্লাজমা এবং নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণা কেন্দ্রের অর্জিত অগ্রগতি দেশীয় জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বিকাশে ইরানি বিজ্ঞানীদের দক্ষতাকে প্রমাণ করে। বহিরাগত চাপ এবং শত্রুতা সত্ত্বেও ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠার দ্বারা উদ্ভাবন এবং অগ্রগতির এই উজ্জ্বল পথ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।

এসডিবিডি প্লাজমা জেনারেশন ডিভাইসটি কেবল একটি বৈজ্ঞানিক সাফল্যই নয়, বরং দেশীয় শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য একটি বাস্তব সমাধানও। এটি ইরানের শিল্প ও চিকিৎসা বাস্তুতন্ত্রে পারমাণবিক প্রযুক্তির একীকরণের পথও প্রশস্ত করে। সূত্র: পার্স টুডে, ওয়েস্ট এশিয়া নিউজ এজেন্সি।

জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াতের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের মতবিনিময়, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি

নতুন প্লাজমা ডিভাইস আবিষ্কার করলেন ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা

আপডেট সময় ০৪:৫০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

এবার সারফেস ডাইলেক্ট্রিক ব্যারিয়ার ডিসচার্জ (এসডিবিডি) পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি প্লাজমা ডিভাইস তৈরিতে সফল হয়েছেন ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এই প্রযুক্তিটি উদ্ভাবনে কাজ করে ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট। তবে, এই গবেষণার প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকা পরমাণু বিজ্ঞানী গেল ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে দখলদারদের হামলায় নিহত হন।

বর্তমান বিশ্বে পারমাণবিক শক্তি কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই একটি সক্ষম উৎস হিসেবে বিবেচিত হয় না, বরং চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প এবং পরিবেশসহ বিভিন্ন বিজ্ঞানের অগ্রগতিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন।

নতুন আবিষ্কৃত ডিভাইসটি এমন একটি প্রযুক্তি যা বায়ুমণ্ডলীয় চাপে প্লাজমা তৈরির মাধ্যমে সারফেস পরিবর্তন, জীবাণুমুক্তকরণ এবং চিকিৎসা শিল্পে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্লাজমা প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং শক্তি খরচ কমাতে এ ধরনের একটি ব্যবস্থা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে। এছাড়াও এই পদ্ধতির প্রক্রিয়াগুলো সহজেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং অন্যান্য নিম্ন-চাপের প্লাজমা উৎপাদন পদ্ধতির তুলনায় প্রক্রিয়াকরণ খরচ অনেকটাই কম।

এই ব্যবস্থার মাধ্যমে উৎপাদিত ঠান্ডা প্লাজমা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা, দন্তচিকিৎসা, পৃষ্ঠতল জীবাণুমুক্তকরণ, মুদ্রণ ও প্যাকেজিং শিল্প, শিল্প ওজোন উৎপাদন, বস্ত্র, খাদ্য শিল্প এবং কৃষি।

যন্ত্রটি উন্নত প্রযুক্তিগত নকশা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন প্রধান এবং ইরানের একজন বিশিষ্ট পারমাণবিক ব্যক্তিত্ব আমির হোসেইন ফাগিহির অধীনে কর্মরত গবেষকদের প্রচেষ্টার ফলাফল। ইসরায়েলের হামলায় তেহরানে নিহত হওয়ার আগে তিনি এই গবেষণাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

প্লাজমা এবং নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণা কেন্দ্রের অর্জিত অগ্রগতি দেশীয় জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বিকাশে ইরানি বিজ্ঞানীদের দক্ষতাকে প্রমাণ করে। বহিরাগত চাপ এবং শত্রুতা সত্ত্বেও ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠার দ্বারা উদ্ভাবন এবং অগ্রগতির এই উজ্জ্বল পথ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।

এসডিবিডি প্লাজমা জেনারেশন ডিভাইসটি কেবল একটি বৈজ্ঞানিক সাফল্যই নয়, বরং দেশীয় শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য একটি বাস্তব সমাধানও। এটি ইরানের শিল্প ও চিকিৎসা বাস্তুতন্ত্রে পারমাণবিক প্রযুক্তির একীকরণের পথও প্রশস্ত করে। সূত্র: পার্স টুডে, ওয়েস্ট এশিয়া নিউজ এজেন্সি।