ঢাকা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামীর জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন টুনি, এখন নিজেই ঘরছাড়া!

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১২:৪৩:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • ৫৭৪ বার পড়া হয়েছে

ভালোবাসা কী অন্ধ? কখনো কখনো তা হয়তো অন্ধের চেয়েও বেশি আত্মবিসর্জনের। এমনই এক হৃদয়বিদারক অথচ বাস্তব গল্প উঠে এসেছে সাভারের কলমা এলাকা থেকে। যেখানে ৩৫ বছর বয়সী এক নারী, উম্মে সাহেদীনা টুনি, স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বামীই পরিণত হয়েছেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতায়।

বিয়ের দুই বছরের মাথায় টুনি জানতে পারেন তার স্বামী মোহাম্মদ তারেকের দুটি কিডনিই প্রায় অচল। ওই সময় টুনি সদ্য এক সন্তানের মা হয়েছেন। নিজের সংসার তখনও ঠিকভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এরই মধ্যে আসে স্বামীর জীবন-মৃত্যুর দোলাচলের খবর। কিন্তু টুনি পিছু হটেননি।

ভালোবাসার দায় মেটাতে স্বামীর জন্য নিজের একটি কিডনি দান করেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে যান ভারতে। ব্যয়বহুল চিকিৎসা, অপারেশন, কিডনি প্রতিস্থাপন— সবই টুনির হাতে করা। নিজের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়েও হাসিমুখে স্বামীকে ফিরিয়ে আনেন সুস্থ জীবনে।

কিন্তু জীবন বদলে যায় তারেকের। সুস্থ হওয়ার পর পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। শুরু হয় অনলাইন জুয়া, রাতে ফোনে ফিসফাস, আচরণে বদল। একপর্যায়ে টুনিকে নির্যাতন শুরু করেন, যার পরিণতিতে তাকে মারধর করে ঘরছাড়া করে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রেমিকার সঙ্গেই বসবাস করছেন তারেক।

টুনি বর্তমানে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন তার স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ তারেককে গ্রেপ্তার করলেও তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

এই ঘটনাটি শুধু একজন নারীর নয়, বরং গোটা সমাজের বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভালোবাসার চরম মূল্য চুকিয়ে কিডনি দেওয়া একজন নারীর স্থান কীভাবে হয় ঠাঁইনাড়া এক ঘর? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝেও।

অমানবিকতা আর আত্মপরতা—এই দুটি শব্দ যেন মোহাম্মদ তারেক নামক এক ব্যক্তির মধ্যেই ধরা দেয়। আর টুনি? তিনি হয়ে আছেন আত্মত্যাগের প্রতীক, ভালোবাসার এক নীরব কাহিনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

“দাবি না মানলে নির্বাচন হবে না”— এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী

স্বামীর জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন টুনি, এখন নিজেই ঘরছাড়া!

আপডেট সময় ১২:৪৩:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

ভালোবাসা কী অন্ধ? কখনো কখনো তা হয়তো অন্ধের চেয়েও বেশি আত্মবিসর্জনের। এমনই এক হৃদয়বিদারক অথচ বাস্তব গল্প উঠে এসেছে সাভারের কলমা এলাকা থেকে। যেখানে ৩৫ বছর বয়সী এক নারী, উম্মে সাহেদীনা টুনি, স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বামীই পরিণত হয়েছেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতায়।

বিয়ের দুই বছরের মাথায় টুনি জানতে পারেন তার স্বামী মোহাম্মদ তারেকের দুটি কিডনিই প্রায় অচল। ওই সময় টুনি সদ্য এক সন্তানের মা হয়েছেন। নিজের সংসার তখনও ঠিকভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এরই মধ্যে আসে স্বামীর জীবন-মৃত্যুর দোলাচলের খবর। কিন্তু টুনি পিছু হটেননি।

ভালোবাসার দায় মেটাতে স্বামীর জন্য নিজের একটি কিডনি দান করেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে যান ভারতে। ব্যয়বহুল চিকিৎসা, অপারেশন, কিডনি প্রতিস্থাপন— সবই টুনির হাতে করা। নিজের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়েও হাসিমুখে স্বামীকে ফিরিয়ে আনেন সুস্থ জীবনে।

কিন্তু জীবন বদলে যায় তারেকের। সুস্থ হওয়ার পর পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। শুরু হয় অনলাইন জুয়া, রাতে ফোনে ফিসফাস, আচরণে বদল। একপর্যায়ে টুনিকে নির্যাতন শুরু করেন, যার পরিণতিতে তাকে মারধর করে ঘরছাড়া করে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রেমিকার সঙ্গেই বসবাস করছেন তারেক।

টুনি বর্তমানে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন তার স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ তারেককে গ্রেপ্তার করলেও তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

এই ঘটনাটি শুধু একজন নারীর নয়, বরং গোটা সমাজের বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভালোবাসার চরম মূল্য চুকিয়ে কিডনি দেওয়া একজন নারীর স্থান কীভাবে হয় ঠাঁইনাড়া এক ঘর? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝেও।

অমানবিকতা আর আত্মপরতা—এই দুটি শব্দ যেন মোহাম্মদ তারেক নামক এক ব্যক্তির মধ্যেই ধরা দেয়। আর টুনি? তিনি হয়ে আছেন আত্মত্যাগের প্রতীক, ভালোবাসার এক নীরব কাহিনি।