মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাসুম আহমেদ এক সময় পেশাদার সিএনজি চালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, যা স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাসুম আহমেদ সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন, এশিয়ান টিভির স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। যদিও তিনি মাধ্যমিক পাসও করেননি, তবুও সাংবাদিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এখন নিয়মিত মাঠে কাজ করছেন।
মাসুমের এই উত্তরণকে কেউ দেখছেন আত্মউন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে, আবার কেউ একে সাংবাদিকতা পেশার অবক্ষয়ের প্রতীক বলেই মনে করছেন। জেলার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অভিযোগ করে বলেন, “বর্তমানে লেখাপড়া না জানা অনেকেই নামমাত্র পরিচয়পত্র নিয়ে সাংবাদিকতা করছে। এতে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা ও পেশাগত নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”
সাবেক সিএনজি চালক মাসুম আগে দীর্ঘদিন জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার পারিবারিক ড্রাইভার ছিলেন। পরে যুবলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ওয়ার্ড সভাপতি হন। এরপর থেকেই তার সামাজিক ও আর্থিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগ নেতা হওয়ার পর মাসুম নানা প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও সরকারি সুবিধা আদায়ে সক্রিয় ছিলেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে ঘর পাওয়া এবং সম্প্রতি এক প্রবাসীর বাড়িতে চাঁদা দাবি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনাও রয়েছে তার নামের সঙ্গে। সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও এসব ঘটনায় অন্য অভিযুক্তরা আত্মগোপনে গেলেও মাসুম এখনো সরকারি ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে মাসুম আহমেদ বলেন, “আমি যে সিএনজি চালাতাম, সেটা জুড়ীর সবাই জানে। এখন আমি সাংবাদিক—সমস্যা কোথায়?”
উপজেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম নিশ্চিত করেন, মাসুম এখনো তাদের নিবন্ধিত সদস্য।