ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর পাইলট, কমান্ডার ও ড্রোন অপারেটরদের বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে দাবি করেছে তেহরান। শনিবার (২ আগস্ট) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন মাসে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘অপ্ররোচিত হামলায়’ অংশ নেওয়া বিমানবাহিনীর সদস্যদের নাম-পরিচয়, আবাসস্থল, ইউনিট, ঘাঁটি এবং অতীত কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ নথি এখন ইরানের হাতে রয়েছে।
যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে এসব সেনার মুখ অস্পষ্ট করে দেখানো হয় এবং কঠোর নিরাপত্তা অনুসরণ করা হয়, তবুও ইরানি গোয়েন্দারা এসব তথ্য সংগ্রহে সক্ষম হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে দুজন পাইলটের নাম উঠে এসেছে— স্কোয়াড্রন ১১৯ (ব্যাট স্কোয়াড্রন)-এর ডেপুটি কমান্ডার মেজর ইয়েল অ্যাশ এবং তার স্বামী বার প্রিন্স। ইয়েল অ্যাশকে পরিচয় করানো হয় ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপুর যুদ্ধে নিখোঁজ হওয়া ইসরায়েলি পাইলট মেজর শিমন অ্যাশের নাতনি হিসেবে।
ইরানি চ্যানেল জানায়, শুধু পরিচয় নয়, এসব পাইলট ও কমান্ডারের সুনির্দিষ্ট বাসস্থানের অবস্থানও এখন তাদের নজরদারিতে রয়েছে। স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে তাদের বাড়ি ও চলাচলের পথ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইয়েল অ্যাশ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তিনি সাধারণ ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চান। তবে চ্যানেলটি মন্তব্য করেছে, “আজ তিনি নিজেই আর নিরাপদ নন।”
ইরান দাবি করেছে, এই তথ্যভান্ডার ভবিষ্যতে প্রতিশোধমূলক হামলায় তাদের জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দেবে। ইতোমধ্যেই ইরানি বাহিনী অন্তত ২২ দফা পাল্টা হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের পারমাণবিক, সামরিক ও শিল্প স্থাপনাগুলো। এসব আঘাতের কারণে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েল তাদের এসব পাইলট ও সেনাকে বেসামরিক স্থানে স্থানান্তর করেছে, যেন ইরানকে পরে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায়। তবে ইরান বলছে, তারা এ কৌশলও বুঝতে পেরেছে।
সবশেষে ইরান সতর্ক করে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা কেবল ‘একটি নমুনা’। ভবিষ্যতে আরও বহু গোপন তথ্য প্রকাশ করা হবে। এ তথ্য ফাঁস ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: পার্স নিউজ