ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটিপতি ৩ ঝাড়ুদারের ঢাকায় ফ্ল্যাট-প্লট, বিদেশে পড়ে সন্তান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৭:০৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫১৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জীবনযাত্রা যেন অন্য গল্প বলে। মাসিক বেতন ৭০ হাজার টাকার চাকরি, অথচ তাদের সম্পদ, আয়-উপার্জন আর জীবনযাপন ঢাকায় বড় ব্যবসায়ী কিংবা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও ছাড়িয়ে গেছে। কেউ হয়েছেন পাঁচতলা ভবনের মালিক, কেউ চালাচ্ছেন ব্যবসা—সন্তানরা পড়ছে কানাডার মতো দেশে। গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানে এই অস্বাভাবিক সম্পদের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। এই তিনজন হলেন—আব্দুল লতিফ, আব্দুল জলিল ও এখলাছ। শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবেই নয়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতা হিসেবেও পরিচিত। জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে জালিয়াতির মতো অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।আব্দুল লতিফ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও এখন তিনি হাজারীবাগে ছয়তলা ভবনের একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক। তার স্ত্রীও একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তিনি স্কেলিং ভেঞ্চারস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউনিয়নের নেতৃত্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ১৬ বছরে সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন তিনি। এমনকি কোয়ার্টার পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি ভবনের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঢাকায় আরও দুটি ফ্ল্যাট, কুমিল্লার হোমনায় একাধিক সম্পত্তি, দোকান ও ফার্মেসি রয়েছে তার। আর ছেলে পড়ছে কানাডায়। আব্দুল জলিল স্কেলিং ভেঞ্চারস ইউনিয়নের সহসভাপতি জলিলের বেতন ছিল মাসে ৭০,২৫০ টাকা। অথচ এখন তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে তিনতলা ভবনের মালিক। সহকর্মীরা বলছেন, কামরাঙ্গীরচরেও তার আরও সম্পত্তি রয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করলেও অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে, তার সম্পদের পরিমাণ বেতনের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এখলাছ সাউথ সিটির পরিচ্ছন্নতাকর্মী এখলাছের কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া এলাকায় রয়েছে পাঁচতলা ভবন। পাশেই নির্মাণাধীন একটি ভবনেও রয়েছে তার শেয়ার। অথচ এখনো সিটি করপোরেশনের কোয়ার্টারে অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখল করে বসবাস করছেন। সহকর্মীদের অভিযোগ, এরা নিজেরা মাঠে কাজ না করে অন্যদের দিয়ে দায়িত্ব করান। কেউ কেউ আবার ছুটিতে থেকে বেতনের অর্ধেক রেখে বাকিটা দিয়ে দেন প্রক্সি কর্মীকে। এক শ্রমিক ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘চাকরি পায় তারা-ই, যাদের ট্যাগ আছে। সাধারণ মানুষের সুযোগ হয় না।’ অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, এ তিন ঝাড়ুদার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এখন বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক প্রভাবকে হাতিয়ার করেই তারা গড়ে তুলেছেন অর্থ ও ক্ষমতার সাম্রাজ্য।

জনপ্রিয় সংবাদ

২৫ বছর পূর্ণ, বাধ্যতামূলক অবসরে ৯ পুলিশ পরিদর্শক

কোটিপতি ৩ ঝাড়ুদারের ঢাকায় ফ্ল্যাট-প্লট, বিদেশে পড়ে সন্তান

আপডেট সময় ০৭:০৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জীবনযাত্রা যেন অন্য গল্প বলে। মাসিক বেতন ৭০ হাজার টাকার চাকরি, অথচ তাদের সম্পদ, আয়-উপার্জন আর জীবনযাপন ঢাকায় বড় ব্যবসায়ী কিংবা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও ছাড়িয়ে গেছে। কেউ হয়েছেন পাঁচতলা ভবনের মালিক, কেউ চালাচ্ছেন ব্যবসা—সন্তানরা পড়ছে কানাডার মতো দেশে। গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানে এই অস্বাভাবিক সম্পদের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। এই তিনজন হলেন—আব্দুল লতিফ, আব্দুল জলিল ও এখলাছ। শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবেই নয়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতা হিসেবেও পরিচিত। জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে জালিয়াতির মতো অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।আব্দুল লতিফ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও এখন তিনি হাজারীবাগে ছয়তলা ভবনের একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক। তার স্ত্রীও একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তিনি স্কেলিং ভেঞ্চারস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউনিয়নের নেতৃত্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ১৬ বছরে সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন তিনি। এমনকি কোয়ার্টার পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি ভবনের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঢাকায় আরও দুটি ফ্ল্যাট, কুমিল্লার হোমনায় একাধিক সম্পত্তি, দোকান ও ফার্মেসি রয়েছে তার। আর ছেলে পড়ছে কানাডায়। আব্দুল জলিল স্কেলিং ভেঞ্চারস ইউনিয়নের সহসভাপতি জলিলের বেতন ছিল মাসে ৭০,২৫০ টাকা। অথচ এখন তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে তিনতলা ভবনের মালিক। সহকর্মীরা বলছেন, কামরাঙ্গীরচরেও তার আরও সম্পত্তি রয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করলেও অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে, তার সম্পদের পরিমাণ বেতনের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এখলাছ সাউথ সিটির পরিচ্ছন্নতাকর্মী এখলাছের কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া এলাকায় রয়েছে পাঁচতলা ভবন। পাশেই নির্মাণাধীন একটি ভবনেও রয়েছে তার শেয়ার। অথচ এখনো সিটি করপোরেশনের কোয়ার্টারে অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখল করে বসবাস করছেন। সহকর্মীদের অভিযোগ, এরা নিজেরা মাঠে কাজ না করে অন্যদের দিয়ে দায়িত্ব করান। কেউ কেউ আবার ছুটিতে থেকে বেতনের অর্ধেক রেখে বাকিটা দিয়ে দেন প্রক্সি কর্মীকে। এক শ্রমিক ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘চাকরি পায় তারা-ই, যাদের ট্যাগ আছে। সাধারণ মানুষের সুযোগ হয় না।’ অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, এ তিন ঝাড়ুদার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এখন বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক প্রভাবকে হাতিয়ার করেই তারা গড়ে তুলেছেন অর্থ ও ক্ষমতার সাম্রাজ্য।