পাকিস্তানের জনপ্রিয় শিশু ইউটিউবার মুহাম্মদ শিরাজ ও তার বোন মুসকান নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ার আয়কে গ্রামের উন্নয়নে ব্যবহার করছেন। গিলগিত-বালতিস্তানের সিয়াচেন পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রায় ২,০০০ মানুষের ছোট্ট গ্রাম ঘুরসেই থেকে উঠে আসা এই ভাইবোন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন।
শিরাজ তার ভ্লগে গ্রামের পাথুরে রাস্তা, পারসিয়ান ধাঁচের বাড়ি, স্থানীয় উৎসব ও দৈনন্দিন জীবনের চিত্র তুলে ধরেন। মুসকানের হাস্যোজ্জ্বল উপস্থিতি চ্যানেলটির জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়েছে। শিরাজের পিতা মুহাম্মদ তাকী প্রথমবার ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে গ্রামের পুরনো স্কুলটির দুরবস্থা প্রকাশ করেন, যেখানে শিশুরা বাইরে বসে পড়াশোনা করত, ইউনিফর্ম, জুতো ও মৌলিক সুবিধা ছাড়া।
পরিবারটি উন্নত জীবনযাত্রার জন্য ইসলামাবাদে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও তাকী জানান, তারা গ্রামের উন্নয়নের জন্য সেখানেই থেকে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। শিরাজ ও মুসকানের ব্যক্তিগত আয়ের পাশাপাশি বড় দাতা ফাওজিয়া জাকি ও তার ভাগ্নি জেহরা জৈদীর সহায়তায় পুরনো স্কুলটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।
নতুন এই স্কুল ‘জাকি অ্যাকাডেমি’ এখন প্রশস্ত ক্লাসরুম, মানসম্মত শিক্ষাসুবিধা, বিনোদন ক্ষেত্র ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ প্রদান করছে। পাশাপাশি ফাওজিয়া ও জেহরা গ্রামে একটি প্রাথমিক বাঁধ, পানির পাম্প, সৌর প্যানেল ও জরুরি চিকিৎসা সহায়তা চালু করেছেন।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাকী গ্রামের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের অনুরোধ করেন, যাতে বন্যা থেকে গ্রামকে রক্ষা করা যায়। আপাতত গ্রামবাসীরা অস্থায়ী বাঁধ ব্যবহার করছে, কিন্তু স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তা থেকে যাচ্ছে।
শিরাজ ও মুসকানের এই উদ্যোগ প্রমাণ করছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবকে ইতিবাচক ও সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা সম্ভব।