ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ইরান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১২:৩৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫২১ বার পড়া হয়েছে

 

বিগত ১০০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম খরার মুখে পড়েছে ইরান। এ অবস্থায় দেশটির রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের জন্য পর্যায়ক্রমে পানির সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রায় এক কোটি মানুষের শহর তেহরানে নজিরবিহীন পানি সঙ্কট মোকাবিলায় এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

 

 

শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

 

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি বছর দেশটির রাজধানীতে গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইরানের অর্ধেক প্রদেশে কয়েক মাস ধরে একফোঁটাও বৃষ্টিপাত হয়নি।

 

 

পানির সঙ্কট মোকাবিলায় ইরান সরকার এখন তেহরানে নির্দিষ্ট সময় পর পর পানির সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে। দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম বলেছে, ইতোমধ্যেই কিছু এলাকায় রাতের বেলায় পাইপে পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

 

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলি আবাদি বলেছেন, নতুন এই পদক্ষেপ পানির অপচয় রোধে সহায়তা করবে। যদিও কিছু অসুবিধা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

 

এর আগে, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সম্প্রচারিত এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, চলতি বছরের শেষের মধ্যে যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে তেহরান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। তবে, কীভাবে এমন বৃহৎ অভিযান পরিচালনা করা হবে, সেই বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানাননি তিনি।

 

ইরানের আলবোরজ পর্বতমালার দক্ষিণের ঢালে অবস্থিত তেহরানে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। তবে, এই পরিস্থিতি সাধারণত শরতের বৃষ্টি ও শীতের তুষারপাত দিয়ে কিছুটা প্রশমিত হয়।

 

 

ইরানের সবচেয়ে বড় শহর তেহরান। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, শহরটির বাসিন্দারা প্রতিদিন তিন মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ব্যবহার করেন। রাজধানীর অন্যতম প্রধান জলাধার কারাজ নদীর আমির কবির বাঁধ বর্তমানে প্রায় শুকিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তেহরান পানি কোম্পানির মহাপরিচালক বেহজাদ পারসা। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে তিনি বলেছেন, বর্তমানে ওই বাঁধে মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনলিটার পানি আছে। গত বছরের একই সময় এই পানির পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার।

 

তিনি বলেন, বর্তমানে এই পানি দিয়ে তেহরান অঞ্চলের বাসিন্দাদের পানির চাহিদা মেটানো যাবে মাত্র দুই সপ্তাহ। শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, দেশটির কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহান এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজে অবস্থিত কয়েকটি বাঁধের পানির স্তরও আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে নিচে নেমে গেছে।

 

ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদের উপ-মেয়র হাসান হোসেইনি বৃহস্পতিবার আইআরএনএকে বলেছিলেন, পানির সঙ্কট মোকাবিলায় রাতের বেলায় সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

 

 

চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে ভয়াবহ গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে ওঠায় পানি ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য তেহরানে দু’দিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছিল।

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জ–৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমান: ‘ফজু পাগলা’ উপাধি নিয়ে আনন্দিত

শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ইরান

আপডেট সময় ১২:৩৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

 

বিগত ১০০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম খরার মুখে পড়েছে ইরান। এ অবস্থায় দেশটির রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের জন্য পর্যায়ক্রমে পানির সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রায় এক কোটি মানুষের শহর তেহরানে নজিরবিহীন পানি সঙ্কট মোকাবিলায় এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

 

 

শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

 

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি বছর দেশটির রাজধানীতে গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইরানের অর্ধেক প্রদেশে কয়েক মাস ধরে একফোঁটাও বৃষ্টিপাত হয়নি।

 

 

পানির সঙ্কট মোকাবিলায় ইরান সরকার এখন তেহরানে নির্দিষ্ট সময় পর পর পানির সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে। দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম বলেছে, ইতোমধ্যেই কিছু এলাকায় রাতের বেলায় পাইপে পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

 

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলি আবাদি বলেছেন, নতুন এই পদক্ষেপ পানির অপচয় রোধে সহায়তা করবে। যদিও কিছু অসুবিধা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

 

এর আগে, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সম্প্রচারিত এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, চলতি বছরের শেষের মধ্যে যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে তেহরান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। তবে, কীভাবে এমন বৃহৎ অভিযান পরিচালনা করা হবে, সেই বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানাননি তিনি।

 

ইরানের আলবোরজ পর্বতমালার দক্ষিণের ঢালে অবস্থিত তেহরানে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। তবে, এই পরিস্থিতি সাধারণত শরতের বৃষ্টি ও শীতের তুষারপাত দিয়ে কিছুটা প্রশমিত হয়।

 

 

ইরানের সবচেয়ে বড় শহর তেহরান। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, শহরটির বাসিন্দারা প্রতিদিন তিন মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ব্যবহার করেন। রাজধানীর অন্যতম প্রধান জলাধার কারাজ নদীর আমির কবির বাঁধ বর্তমানে প্রায় শুকিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তেহরান পানি কোম্পানির মহাপরিচালক বেহজাদ পারসা। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে তিনি বলেছেন, বর্তমানে ওই বাঁধে মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনলিটার পানি আছে। গত বছরের একই সময় এই পানির পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার।

 

তিনি বলেন, বর্তমানে এই পানি দিয়ে তেহরান অঞ্চলের বাসিন্দাদের পানির চাহিদা মেটানো যাবে মাত্র দুই সপ্তাহ। শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, দেশটির কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহান এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজে অবস্থিত কয়েকটি বাঁধের পানির স্তরও আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে নিচে নেমে গেছে।

 

ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদের উপ-মেয়র হাসান হোসেইনি বৃহস্পতিবার আইআরএনএকে বলেছিলেন, পানির সঙ্কট মোকাবিলায় রাতের বেলায় সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

 

 

চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে ভয়াবহ গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে ওঠায় পানি ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য তেহরানে দু’দিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছিল।