মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) মাগরিব নামাজের সময় দেউলভোগ দয়হাটা বায়তুল আমান জামে মসজিদের ভেতরে ও বাইরে এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—আব্দুর রহিম (৪৮), আক্তার হোসেন (৪৫), তরিকুল ইসলাম (৪০) ও মমিনুল ইসলাম ফাহিম (২২)। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তরিকুল ইসলামের বোন রুবিনা আক্তারকে আটক করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর থানার ওসি কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আওলাদ হোসেন উজ্জ্বলের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক খানের জানাজায় যোগ দিতে নেতাকর্মীরা মসজিদে জড়ো হন। এসময় মসজিদসংলগ্ন রাস্তায় যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা তরিকুল ইসলামের মোটরসাইকেলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শেখ আব্দুল্লাহর ছবিযুক্ত স্টিকার দেখে সরাফত আলী সপুপন্থী এক কর্মী বিরূপ মন্তব্য করেন। জবাবে তরিকুল পাল্টা মন্তব্য করলে উত্তেজনা বাড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মনোনয়নপ্রত্যাশী মীর সরাফত আলী সপু অভিযোগ করে বলেন, এটি ‘পরিকল্পিত হামলা’। তিনি দাবি করেন, তার কর্মীরা মসজিদে আশ্রয় নিলে প্রতিপক্ষের লোকজন অস্ত্রের মুখে ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়। তিনি দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং শনিবার সকাল ১০টায় প্রতিবাদ মিছিলের ঘোষণা দেন।
অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী আলহাজ মমিন আলী বলেন, তরিকুল শেখ মো. আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ এবং পূর্বেও বিভিন্ন ঘটনার কারণে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে কয়েকজন নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উত্তেজনাকর ও বিভাজনমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, দেউলভোগে জানাজায় সপুপন্থীদের উপস্থিতি বেশি ছিল এবং তরিকুল ইসলামের ওপর হামলাও তারাই করেছে। পরে তরিকুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। তিনি সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
শ্রীনগর থানার ওসি নাজমুল হুদা খান জানিয়েছেন, একজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, বাকি জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি হত্যা চেষ্টা মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করলে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ওসি কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরীকে সেদিনই প্রত্যাহার করা হয় এবং পরদিন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে তরিকুলকে বহিষ্কার করা হয়।

























