ঢাকা ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুজিবকে ‘আল্লাহর ওলি’ আখ্যা দেয়া সেই আ.লীগ নেতার সঙ্গে বিএনপি প্রার্থীর ছবি ভাইরাল

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২৯ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড–পাহাড়তলী–আকবরশাহ) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য ধানের শীষের প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চসিক মেয়র এম মনজুর আলমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তৃণমূল বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, কাজী সালাউদ্দিনের মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে আগে থেকেই অসন্তোষ ছিল। তার একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়—কাজী সালাউদ্দিন এম মনজুর আলমের অফিসে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করছেন; পাশে আরও কয়েকজন স্থানীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, কাট্টলীতে একটি জানাজায় অংশ নিতে গেলে মনজুর আলমের আমন্ত্রণে কাজী সালাউদ্দিন তার কার্যালয়ে যান। সেখানেই তাদের কথোপকথনের দৃশ্য ধারণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিএনপির ভেতরে অস্বস্তি তৈরি হয়।

আওয়ামী লীগমুখী অবস্থান, বিতর্কিত মন্তব্য ও কাজকর্মের কারণে মনজুর আলম দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচিত। পরিবারকে ‘আওয়ামী পরিবার’ ঘোষণা করা, রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টানো, এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানকে “আল্লাহর ওলি” আখ্যা দেওয়া— এসব বিতর্কের কারণে তিনি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।

এমন একজন বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর আড্ডার ছবি ভাইরাল হওয়ায় তৃণমূল বিএনপিতে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব ছালে আহাম্মদ সওদাগর বলেন, কাজী সালাউদ্দিন ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কার করে ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি ভেঙে সংগঠনকে অস্থিতিশীল করেছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার আঁতাত আছে বলেই গত ১৭ বছরে তিনি কখনো গ্রেপ্তার হননি।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোরসালিন বলেন, শেখ মুজিবকে ‘আল্লাহর ওলি’ বলেছিলেন যে মনজুর আলম, তার অফিসে বসে বিএনপি প্রার্থীর চা-আড্ডা জনগণকে হতবাক করেছে। তিনি অভিযোগ করেন—ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবসা-বাণিজ্যও কাজী সালাউদ্দিন নিয়ন্ত্রণ করেন।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে গিয়ে গল্প করা অগ্রহণযোগ্য। সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির ২২ নভেম্বরের জরুরি সভায় ২৮ নেতা লিখিত রেজুলেশনে সালাউদ্দিনের ভাই ও উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মহিউদ্দিনকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয় ফান্ড আত্মসাতের অভিযোগে সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দাবি করেন—সীতাকুণ্ডে বিএনপিকে জিততে হলে কাজী সালাউদ্দিনকে পরিবর্তন ছাড়া উপায় নেই। তাদের মতে, কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে অধ্যাপক আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে আসনটি বিপুল ভোটে জেতা সম্ভব হবে এবং এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দেওয়া যাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসলাম গ্রহণ করলেন মার্কিন টিকটক তারকা ক্যানিয়ন মিম্বস

মুজিবকে ‘আল্লাহর ওলি’ আখ্যা দেয়া সেই আ.লীগ নেতার সঙ্গে বিএনপি প্রার্থীর ছবি ভাইরাল

আপডেট সময় ০৯:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড–পাহাড়তলী–আকবরশাহ) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য ধানের শীষের প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চসিক মেয়র এম মনজুর আলমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তৃণমূল বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, কাজী সালাউদ্দিনের মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে আগে থেকেই অসন্তোষ ছিল। তার একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়—কাজী সালাউদ্দিন এম মনজুর আলমের অফিসে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করছেন; পাশে আরও কয়েকজন স্থানীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, কাট্টলীতে একটি জানাজায় অংশ নিতে গেলে মনজুর আলমের আমন্ত্রণে কাজী সালাউদ্দিন তার কার্যালয়ে যান। সেখানেই তাদের কথোপকথনের দৃশ্য ধারণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিএনপির ভেতরে অস্বস্তি তৈরি হয়।

আওয়ামী লীগমুখী অবস্থান, বিতর্কিত মন্তব্য ও কাজকর্মের কারণে মনজুর আলম দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচিত। পরিবারকে ‘আওয়ামী পরিবার’ ঘোষণা করা, রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টানো, এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানকে “আল্লাহর ওলি” আখ্যা দেওয়া— এসব বিতর্কের কারণে তিনি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।

এমন একজন বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর আড্ডার ছবি ভাইরাল হওয়ায় তৃণমূল বিএনপিতে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব ছালে আহাম্মদ সওদাগর বলেন, কাজী সালাউদ্দিন ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কার করে ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি ভেঙে সংগঠনকে অস্থিতিশীল করেছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার আঁতাত আছে বলেই গত ১৭ বছরে তিনি কখনো গ্রেপ্তার হননি।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোরসালিন বলেন, শেখ মুজিবকে ‘আল্লাহর ওলি’ বলেছিলেন যে মনজুর আলম, তার অফিসে বসে বিএনপি প্রার্থীর চা-আড্ডা জনগণকে হতবাক করেছে। তিনি অভিযোগ করেন—ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবসা-বাণিজ্যও কাজী সালাউদ্দিন নিয়ন্ত্রণ করেন।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে গিয়ে গল্প করা অগ্রহণযোগ্য। সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির ২২ নভেম্বরের জরুরি সভায় ২৮ নেতা লিখিত রেজুলেশনে সালাউদ্দিনের ভাই ও উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মহিউদ্দিনকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয় ফান্ড আত্মসাতের অভিযোগে সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দাবি করেন—সীতাকুণ্ডে বিএনপিকে জিততে হলে কাজী সালাউদ্দিনকে পরিবর্তন ছাড়া উপায় নেই। তাদের মতে, কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে অধ্যাপক আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে আসনটি বিপুল ভোটে জেতা সম্ভব হবে এবং এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দেওয়া যাবে।