ঢাকা ০৪:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় নির্বাচনে ‘নীরব ভোট বিপ্লবের’ আশায় জামায়াতে ইসলামী

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩০ বার পড়া হয়েছে

 


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী এখন ব্যাপক প্রত্যাশায়। জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী ফ্যাসিবাদমুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ভোটের মাঠে নতুন আমেজ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলটির প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি গিয়ে ন্যায়–ইনসাফনির্ভর কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্ন তুলে ধরছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, শুধুমাত্র কর্মী–সমর্থক নয়, সাধারণ ভোটারদের মাঝেও তারা এবার উল্লেখযোগ্য সাড়া পাচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নীরব ভোট বিপ্লব ঘটতে পারে বলে দৃঢ়ভাবে আশা করছে জামায়াত। বিশেষ করে নারী, তরুণ ও শ্রমজীবী শ্রেণির মধ্যে দাঁড়িপাল্লার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

২০০১ সালে জোটবদ্ধভাবে সরকারে অংশ নেওয়া এবং ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে দুটি আসনে জয়সহ অতীতে সংসদীয় উপস্থিতি ছিল দলটির। তবে ২০০৯ থেকে জুলাই বিপ্লবের আগ পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের দমন–পীড়ন, গ্রেপ্তার–নির্যাতন ও দলীয় কার্যক্রমে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এমনকি সরকার পতনের আগ মুহূর্তে দলটিকে নিষিদ্ধও ঘোষণা করা হয়।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর জামায়াত স্বাভাবিকভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এবং আসন্ন নির্বাচনে ব্যাপক গণসংযোগে নেমেছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, পূর্বের তুলনায় জামায়াতের সমর্থন তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামি ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা সফল হলে ভোটের হার আরও বাড়বে বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয়কে তরুণ সমাজের পরিবর্তনের বার্তা হিসেবে দেখছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। তিনি মনে করেন, জাতীয় নির্বাচনে এমন আরেকটি বড় চমক দেখা যেতে পারে।

ঢাকাসহ নানা আসনে গণসংযোগে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের দাবি—আগে অন্য দলকে ভোট দেওয়া বহু ভোটার এবার দাঁড়িপাল্লাকে সমর্থন করছে। তারা বলছেন, নৌকা, ধানের শীষ বা লাঙ্গলের নেতৃত্বে সরকার দেখার পর এবার তারা নতুন বিকল্প হিসেবে জামায়াতকে সুযোগ দিতে চান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নারী-পুরুষ, শ্রমিক ও তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তরুণরা পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন চায়, আর সেই পরিবর্তনের কেন্দ্র হিসেবে জামায়াতকে দেখছে।

দেশের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক নারী হওয়ায় মহিলা বিভাগও ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। উঠান বৈঠক, সামাজিক কার্যক্রম ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে নারীদের মাঝে দলীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। নেত্রীদের দাবি—অনেক নারী আগামীতেও দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

মাঠ পর্যায়ের চিত্র তুলে ধরে মহিলা বিভাগের এক দায়িত্বশীল নেত্রী বলেন, ‘সব দল দেখা শেষ, জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ’—এই স্লোগান নারীদের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যাশিত ভালো ফলাফলের আশায় উদ্বেলিত জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমর্থকরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

জাতীয় নির্বাচনে ‘নীরব ভোট বিপ্লবের’ আশায় জামায়াতে ইসলামী

আপডেট সময় ০৯:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

 


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী এখন ব্যাপক প্রত্যাশায়। জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী ফ্যাসিবাদমুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ভোটের মাঠে নতুন আমেজ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলটির প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি গিয়ে ন্যায়–ইনসাফনির্ভর কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্ন তুলে ধরছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, শুধুমাত্র কর্মী–সমর্থক নয়, সাধারণ ভোটারদের মাঝেও তারা এবার উল্লেখযোগ্য সাড়া পাচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নীরব ভোট বিপ্লব ঘটতে পারে বলে দৃঢ়ভাবে আশা করছে জামায়াত। বিশেষ করে নারী, তরুণ ও শ্রমজীবী শ্রেণির মধ্যে দাঁড়িপাল্লার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

২০০১ সালে জোটবদ্ধভাবে সরকারে অংশ নেওয়া এবং ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে দুটি আসনে জয়সহ অতীতে সংসদীয় উপস্থিতি ছিল দলটির। তবে ২০০৯ থেকে জুলাই বিপ্লবের আগ পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের দমন–পীড়ন, গ্রেপ্তার–নির্যাতন ও দলীয় কার্যক্রমে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এমনকি সরকার পতনের আগ মুহূর্তে দলটিকে নিষিদ্ধও ঘোষণা করা হয়।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর জামায়াত স্বাভাবিকভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এবং আসন্ন নির্বাচনে ব্যাপক গণসংযোগে নেমেছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, পূর্বের তুলনায় জামায়াতের সমর্থন তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামি ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা সফল হলে ভোটের হার আরও বাড়বে বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয়কে তরুণ সমাজের পরিবর্তনের বার্তা হিসেবে দেখছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। তিনি মনে করেন, জাতীয় নির্বাচনে এমন আরেকটি বড় চমক দেখা যেতে পারে।

ঢাকাসহ নানা আসনে গণসংযোগে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের দাবি—আগে অন্য দলকে ভোট দেওয়া বহু ভোটার এবার দাঁড়িপাল্লাকে সমর্থন করছে। তারা বলছেন, নৌকা, ধানের শীষ বা লাঙ্গলের নেতৃত্বে সরকার দেখার পর এবার তারা নতুন বিকল্প হিসেবে জামায়াতকে সুযোগ দিতে চান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নারী-পুরুষ, শ্রমিক ও তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তরুণরা পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন চায়, আর সেই পরিবর্তনের কেন্দ্র হিসেবে জামায়াতকে দেখছে।

দেশের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক নারী হওয়ায় মহিলা বিভাগও ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। উঠান বৈঠক, সামাজিক কার্যক্রম ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে নারীদের মাঝে দলীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। নেত্রীদের দাবি—অনেক নারী আগামীতেও দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

মাঠ পর্যায়ের চিত্র তুলে ধরে মহিলা বিভাগের এক দায়িত্বশীল নেত্রী বলেন, ‘সব দল দেখা শেষ, জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ’—এই স্লোগান নারীদের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যাশিত ভালো ফলাফলের আশায় উদ্বেলিত জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমর্থকরা।