ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসনাতকে পরবর্তী টার্গেট; ভারতীয় সাবেক সেনা কর্মকর্তার পোস্ট

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৩৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫১৮ বার পড়া হয়েছে

 

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জুলাই যোদ্ধা, দেশপ্রেমিক ও ভারতবিরোধী এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ—এমন খবরের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তার ছবি-সহ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচিত কর্নেল অজয় রায়না ‘ব্যাটালিয়ান সেভেন্টি ওয়ান’ নামের একটি অ্যাকাউন্টের পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, হাদির পর পরবর্তী টার্গেট হাসনাত আব্দুল্লাহ।

এই পোস্টটি শেয়ার করে রওশন হক নামের এক বাংলাদেশি এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, যিনি পোস্টটি করেছেন তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য, ২৯টি বইয়ের লেখক ও একজন চলচ্চিত্র পরামর্শক। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, হাদির ওপর হামলার পেছনে ভারতের সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং হাসনাতই পরবর্তী লক্ষ্য—এমন হুমকির কথা পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে তিনি সতর্ক করে লিখেছেন, বাংলাদেশ চাইলে ভারতের অভ্যন্তরেও পাল্টা জবাব দিতে পারে।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ ভারতকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনে পরিণত করতে চায় এবং যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার মানে না—তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এ ধারা চলতে থাকলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার কথাও তিনি বলেন।

হাসনাতের বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি এ ধরনের বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে একীভূত বা আলাদা করার ধারণা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও মন্তব্য করেন, ভারত একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র এবং শত্রুতামূলক আচরণ চলতে থাকলে ভারত নীরব থাকবে না।

এদিকে, হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার পর ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা গেছে—নিজেদেরই নিজেদের গুলি করার অভিযোগ, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ঘরছাড়া করার কথা। অডিওতে জুলাই যোদ্ধাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের অভিযোগও রয়েছে। আরেকটি ফাঁস হওয়া অডিওতে মাঠে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এর আগে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতাদের ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনায়ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার অভিযোগ উঠে। ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল—এমন অভিযোগ বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। একটি জাতীয় পত্রিকায় দাবি করা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর হামলাকারীরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে—এমন খবরও বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ফাঁস হওয়া ফোনকল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্য হুমকি এবং ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের কড়া বক্তব্য—সব মিলিয়ে দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে জবি শিবিরের বিক্ষোভের ডাক

হাসনাতকে পরবর্তী টার্গেট; ভারতীয় সাবেক সেনা কর্মকর্তার পোস্ট

আপডেট সময় ১১:৩৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

 

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জুলাই যোদ্ধা, দেশপ্রেমিক ও ভারতবিরোধী এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ—এমন খবরের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তার ছবি-সহ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচিত কর্নেল অজয় রায়না ‘ব্যাটালিয়ান সেভেন্টি ওয়ান’ নামের একটি অ্যাকাউন্টের পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, হাদির পর পরবর্তী টার্গেট হাসনাত আব্দুল্লাহ।

এই পোস্টটি শেয়ার করে রওশন হক নামের এক বাংলাদেশি এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, যিনি পোস্টটি করেছেন তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য, ২৯টি বইয়ের লেখক ও একজন চলচ্চিত্র পরামর্শক। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, হাদির ওপর হামলার পেছনে ভারতের সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং হাসনাতই পরবর্তী লক্ষ্য—এমন হুমকির কথা পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে তিনি সতর্ক করে লিখেছেন, বাংলাদেশ চাইলে ভারতের অভ্যন্তরেও পাল্টা জবাব দিতে পারে।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ ভারতকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনে পরিণত করতে চায় এবং যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার মানে না—তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এ ধারা চলতে থাকলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার কথাও তিনি বলেন।

হাসনাতের বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি এ ধরনের বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে একীভূত বা আলাদা করার ধারণা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও মন্তব্য করেন, ভারত একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র এবং শত্রুতামূলক আচরণ চলতে থাকলে ভারত নীরব থাকবে না।

এদিকে, হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার পর ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা গেছে—নিজেদেরই নিজেদের গুলি করার অভিযোগ, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ঘরছাড়া করার কথা। অডিওতে জুলাই যোদ্ধাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের অভিযোগও রয়েছে। আরেকটি ফাঁস হওয়া অডিওতে মাঠে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এর আগে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতাদের ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনায়ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার অভিযোগ উঠে। ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল—এমন অভিযোগ বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। একটি জাতীয় পত্রিকায় দাবি করা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হাদিকে হত্যাচেষ্টার পর হামলাকারীরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে—এমন খবরও বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ফাঁস হওয়া ফোনকল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্য হুমকি এবং ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের কড়া বক্তব্য—সব মিলিয়ে দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।