ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিন গ্রেপ্তার ২ হাজার, নির্বাচনে উৎসবের আমেজ ফিরবে : ইসি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩০ বার পড়া হয়েছে

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, গণমাধ্যম অফিসে হামলা এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন শুরু হয়েছে। এর ফলে নির্বাচনে উৎসবের আমেজ ফিরবে বলে জানান তিনি।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম ও আচরণবিধি প্রতিপালনসহ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। দুপুর আড়াইটার পর নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এর আগে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী প্রধানের সঙ্গে দুপুর ১২টায় বৈঠক করে ইসি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান কমিশনার সানাউল্লাহ।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার অফিসে দীর্ঘ সময় ধরে চলা হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আপনারা আমাদের অংশীজন। আপনারা নিরাপদ বোধ না করলে দায়িত্ব পালন করবেন কীভাবে? একটি দুষ্টচক্র মানুষের আবেগ ও ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে এসব ঘটিয়েছে। তবে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার, এই সুযোগ আর দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানান, সারা দেশে বর্তমানে ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন চলছে। অপারেশন শুরুর পর একটি বাহিনীই ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সেইসঙ্গে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করে সানাউল্লাহ জানান, তফসিল ঘোষণার পরদিনই এই ঘটনা আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কোনো ল্যাপস ছিল কি না, তা নিয়ে ইন্ট্রোস্পেকশন করার সুযোগ আছে। যারা দস্যুতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটাবে, তাদের প্রতি কোনো মানবিকতা দেখানো হবে না।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী প্রিজাইডিং অফিসারের অধীনে নয়, বরং স্বাধীনভাবে কাজ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার জানান, তিন বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রায় ১ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। যার এক-তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। তারা সমন্বিতভাবে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে।

তিনি জানান, নির্বাচন বানচাল করতে শহর এলাকাকে টার্গেট করে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হতে পারে। এ অবস্থায় প্রার্থীদের প্রতি কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপরিচিত কাউকে যাচাই ছাড়া পাশে রাখা যাবে না। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে। যেকোনো অনিয়মের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার বা কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে।

অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো উৎসবের আমেজে কিছুটা ভাটা ফেললেও কমিশন আশাবাদী বলে জানান সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, বড় উৎসবের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে আমেজ কিছুটা নষ্ট হয়। ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড আমাদের শোকাহত করেছে কিন্তু এই শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। যারা উৎসবের পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, তারা ব্যর্থ হবে। ভোটার, প্রার্থী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উৎসবের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিনা টিকিটে রেলওয়ে ভ্রমণ, এক দিনেই ১৪ লাখের বেশি আদায়

প্রতিদিন গ্রেপ্তার ২ হাজার, নির্বাচনে উৎসবের আমেজ ফিরবে : ইসি

আপডেট সময় ০৮:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, গণমাধ্যম অফিসে হামলা এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন শুরু হয়েছে। এর ফলে নির্বাচনে উৎসবের আমেজ ফিরবে বলে জানান তিনি।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম ও আচরণবিধি প্রতিপালনসহ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। দুপুর আড়াইটার পর নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এর আগে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী প্রধানের সঙ্গে দুপুর ১২টায় বৈঠক করে ইসি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান কমিশনার সানাউল্লাহ।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার অফিসে দীর্ঘ সময় ধরে চলা হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আপনারা আমাদের অংশীজন। আপনারা নিরাপদ বোধ না করলে দায়িত্ব পালন করবেন কীভাবে? একটি দুষ্টচক্র মানুষের আবেগ ও ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে এসব ঘটিয়েছে। তবে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার, এই সুযোগ আর দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানান, সারা দেশে বর্তমানে ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন চলছে। অপারেশন শুরুর পর একটি বাহিনীই ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সেইসঙ্গে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করে সানাউল্লাহ জানান, তফসিল ঘোষণার পরদিনই এই ঘটনা আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কোনো ল্যাপস ছিল কি না, তা নিয়ে ইন্ট্রোস্পেকশন করার সুযোগ আছে। যারা দস্যুতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটাবে, তাদের প্রতি কোনো মানবিকতা দেখানো হবে না।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী প্রিজাইডিং অফিসারের অধীনে নয়, বরং স্বাধীনভাবে কাজ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার জানান, তিন বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রায় ১ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। যার এক-তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। তারা সমন্বিতভাবে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে।

তিনি জানান, নির্বাচন বানচাল করতে শহর এলাকাকে টার্গেট করে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হতে পারে। এ অবস্থায় প্রার্থীদের প্রতি কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপরিচিত কাউকে যাচাই ছাড়া পাশে রাখা যাবে না। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে। যেকোনো অনিয়মের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার বা কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে।

অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো উৎসবের আমেজে কিছুটা ভাটা ফেললেও কমিশন আশাবাদী বলে জানান সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, বড় উৎসবের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে আমেজ কিছুটা নষ্ট হয়। ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড আমাদের শোকাহত করেছে কিন্তু এই শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। যারা উৎসবের পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, তারা ব্যর্থ হবে। ভোটার, প্রার্থী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উৎসবের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।