ঢাকা ০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাহিদ হাসনাতসহ গানম্যান পেলেন যারা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৫৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন করে অস্থিরতা ও আতঙ্কের ছায়া ঘনীভূত হচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের পর যারা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, জনগণের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নে আপসহীন অবস্থান নিয়েছেন, তারাই এখন ধারাবাহিকভাবে টার্গেট হচ্ছেন—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষ করে ভারতের একপক্ষীয় নীতি ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রাজপথ ও কলমে যারা সোচ্চার, তাদের স্তব্ধ করতে একটি সুদূরপ্রসারী ‘নীলনকশা’ বাস্তবায়নের ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক শরীফ ওসমান হাদির ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদের গুলিবর্ষণের ঘটনা এই আশঙ্কাকে কেবল রাজপথেই নয়, নীতিনির্ধারণী মহলেও প্রবলভাবে আলোচনায় এনেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দিল্লির প্রভাবমুক্ত স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির দাবি তোলা ব্যক্তিরাই একটি বিশেষ ‘হিটলিস্টে’ জায়গা করে নিচ্ছেন।
এই প্রেক্ষাপটে জুলাই যোদ্ধা, আন্দোলনের সমন্বয়ক, সংসদ-সদস্য প্রার্থী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে জুলাই আন্দোলনে সম্মুখসারিতে থাকা কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।
নিরাপত্তা তালিকায় রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।
এছাড়া আরও কয়েকজন রাজনীতিক ও সংসদ-সদস্য প্রার্থী গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রধান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার আবেদন করেছেন।
আবেদনের ভিত্তিতে যাদের শিগগিরই গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে বিএনপির সংসদ-সদস্য প্রার্থী তানভির আহমেদ রবিন, পাবনা-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাফির তুহিন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ আরও অনেকে।
ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার শহীদ শরীফ ওসমান হাদির পরিবারকেও বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। তার এক বোনকে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান, পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, “জুলাই যোদ্ধা এবং সংসদ-সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে যারা আমাদের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

শাজাহান খানের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাহারায় যুবদল নেতা

নাহিদ হাসনাতসহ গানম্যান পেলেন যারা

আপডেট সময় ১১:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন করে অস্থিরতা ও আতঙ্কের ছায়া ঘনীভূত হচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের পর যারা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, জনগণের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নে আপসহীন অবস্থান নিয়েছেন, তারাই এখন ধারাবাহিকভাবে টার্গেট হচ্ছেন—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষ করে ভারতের একপক্ষীয় নীতি ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রাজপথ ও কলমে যারা সোচ্চার, তাদের স্তব্ধ করতে একটি সুদূরপ্রসারী ‘নীলনকশা’ বাস্তবায়নের ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক শরীফ ওসমান হাদির ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদের গুলিবর্ষণের ঘটনা এই আশঙ্কাকে কেবল রাজপথেই নয়, নীতিনির্ধারণী মহলেও প্রবলভাবে আলোচনায় এনেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দিল্লির প্রভাবমুক্ত স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির দাবি তোলা ব্যক্তিরাই একটি বিশেষ ‘হিটলিস্টে’ জায়গা করে নিচ্ছেন।
এই প্রেক্ষাপটে জুলাই যোদ্ধা, আন্দোলনের সমন্বয়ক, সংসদ-সদস্য প্রার্থী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে জুলাই আন্দোলনে সম্মুখসারিতে থাকা কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।
নিরাপত্তা তালিকায় রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।
এছাড়া আরও কয়েকজন রাজনীতিক ও সংসদ-সদস্য প্রার্থী গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রধান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার আবেদন করেছেন।
আবেদনের ভিত্তিতে যাদের শিগগিরই গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে বিএনপির সংসদ-সদস্য প্রার্থী তানভির আহমেদ রবিন, পাবনা-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাফির তুহিন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ আরও অনেকে।
ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার শহীদ শরীফ ওসমান হাদির পরিবারকেও বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। তার এক বোনকে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান, পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, “জুলাই যোদ্ধা এবং সংসদ-সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে যারা আমাদের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”