উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যখন পুরো জাতি শোকাহত, ঠিক তখনই সামনে এসেছে এক সাহসিনী শিক্ষিকার বীরত্বগাঁথা।
প্রাথমিক শাখার শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাঁচিয়েছেন অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুহূর্তে তার আত্মত্যাগ সকলকে স্তম্ভিত করেছে, কাঁদিয়েছে গোটা দেশকে।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ঠিক তখন চলছিল প্রাথমিক শ্রেণির ক্লাস। মুহূর্তেই আগুন ও ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার পরও শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত একের পর এক শিক্ষার্থীকে নিরাপদ স্থানে বের করে আনতে থাকেন। আগুন ও ধোঁয়ার ভেতর থেকে নিজের জীবনকে উপেক্ষা করে তিনি শিশুদের রক্ষা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেই আগুন ও ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েন।
রাতেই তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
এক অভিভাবক জানান, “ম্যাডাম অনেক ভালো ছিলেন। সেনাবাহিনী বলেছে, তার সাহসী উদ্যোগে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী প্রাণে বেঁচে গেছে।”
এক উদ্ধারকর্মী বলেন, “আমরা যখন ভেতরে যাই, তখনো তার শরীরের অনেক অংশ দগ্ধ ছিল। তিনি ধ্বংসস্তূপে আটকে ছিলেন, আর চারপাশে ছড়িয়ে ছিল শিক্ষার্থীদের খাতা-ব্যাগ।”
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছেন এবং ১৭১ জন আহত, যাদের মধ্যে ৫০ জনের বেশি দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সরকার মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে এবং ঘটনাটি তদন্তে একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।