উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার একদিন পর, বিধ্বস্ত ভবনের পাশে দাঁড়িয়ে বিস্ময় আর কৃতজ্ঞতায় বিহ্বল হয়ে পড়েন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মোহাইমিন আরিয়ানের মা, আশফিয়া মুমতাজ শিল্পী। ছেলের অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে ফেরার গল্পটি বিবিসি বাংলার কাছে শেয়ার করতে গিয়ে বারবার আবেগে গলা ভারী হয়ে আসছিল তার।
তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবারও ছেলেকে স্কুলে পাঠান, কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল শুধু একটি—সেদিন টিফিন দেননি। তার বদলে কিছু টাকা দিয়েছিলেন যাতে ছেলে নিজেই কিছু কিনে খেতে পারে।
আশফিয়া বলেন, “আমি ছেলেকে বললাম, আজকে তোমাকে টিফিন দিলাম না, টাকা দিয়ে দিলাম, স্কুলে গিয়ে কিছু কিনে খাইও।”
ঘটনার মর্মস্পর্শী বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, আরিয়ান যখন টিফিন কেনার জন্য নিচে নামছিল, তখন তার শিক্ষক তাকে নামতে নিষেধ করেন। কিন্তু আরিয়ান জানায়, তার কোচিং আছে এবং কিছু না খেয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত থাকা সম্ভব না। অনেক অনুরোধের পর শিক্ষক রাজি হন।
“ছেলে নামার পর ওর স্যার ও আরেক বন্ধু একসাথে নিচে নামেন। ঠিক তখনই বিকট শব্দ—ধ্বংস আর মৃত্যুর বিভীষিকা নিয়ে আছড়ে পড়ে যুদ্ধবিমানটি,” বলছিলেন আশফিয়া।
একটু আগ-পিছ করলেই যে সন্তানটি হয়তো আজ আর বেঁচে থাকতো না, সে বাস্তবতা সামনে রেখে নির্বাক হয়ে যান তিনি। সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরার সৌভাগ্য যাদের হয়নি, সেই পরিবারগুলোর কথা মনে করেই বারবার থেমে যাচ্ছিলেন।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অনেকেই প্রিয়জন হারিয়েছেন, কেউ হারিয়েছেন পুরো পরিবার। আর যারা অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন, তাদের মনে রয়ে গেছে দুঃসহ এক জীবন্ত দুঃস্বপ্ন।