৪০ ঘণ্টারও বেশি সময়ের অপেক্ষার পর ঘোষণা হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে ভিপি ও জিএসসহ অন্যান্য পদের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে ভিপি পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু, আর জিএস পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মো. মাজহারুল ইসলাম। যথাক্রমে ৩,৩৩৪ ও ৩,৯৩০ ভোট পেয়ে তারা নির্বাচিত হন। ফল ঘোষণার পর সিনেট ভবনে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়; নবনির্বাচিত জিএস মাজহারুল ভিপি জিতুকে আলিঙ্গন করেন, করমর্দন করেন এবং শিক্ষার্থীরা করতালি দিয়ে এ দৃশ্যকে স্বাগত জানান।
জিতুর রাজনৈতিক যাত্রা ছিল ভিন্নধর্মী। একসময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার পক্ষে দাঁড়ানোয় নিজ সংগঠনের হামলার শিকার হন তিনি। পরবর্তীতে বিবেকের তাগিদে ছাত্রলীগ ছাড়েন এবং ক্যাম্পাসে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’-এর প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন। তিনি বর্তমানে এ প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফল ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় জিতু বলেন, “শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবনকে দলীয় লেজুড়বৃত্তি ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জাহাঙ্গীরনগরে সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে একটি নিরাপদ, শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলব।” তিনি আরও যোগ করেন, “৫ আগস্টের পর আমরা রাজপথে ছিলাম অধিকার ফেরত পাওয়ার জন্য। আজ জাকসুর ফলাফল সেই অধিকারকে ফিরিয়ে দিল।”
বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্রার্থীর নিরঙ্কুশ সাফল্য এবং স্বতন্ত্র ভিপির জয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করছে, তারা পুরনো দলীয় ছত্রচ্ছায়ার বাইরে ভিন্নধর্মী নেতৃত্ব খুঁজে পেয়েছে।
























