ঢাকা ১২:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুর-২ আসনে মনোনয়ন দ্বন্দে বিএনপির দুপক্ষের হামলা, পাল্টা হামলা, ভাংচুর; আহত বেশ কয়েকজন

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৩০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫১৮ বার পড়া হয়েছে

 

মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা এবং ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাংনী বাজারে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন ও জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা।

 

 

এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয় অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ও বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পিরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গাংনী বাজার জুড়ে রয়েছে আতঙ্ক।

 

মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা বলেন, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপি মোননিত প্রার্থী আমজাদ হোসেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাস স্ট্যান্ড দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় মনোনয়ন বঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষের সমর্থকরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে আমজাদ হোসেনে তার কার্যালয়ে অবস্থান নিলে জাভেদ মাসুদ মিল্টন গ্রুপের সমর্থকরা গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামালা চালিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থাকা অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

 

 

এদিকে হামলার খবর পেয়ে হাসপাতাল বাজার থেকে গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে আমজাদ হোসেন পক্ষের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে গাংনী বাস স্ট্যান্ডে চক্তরে আসে। এসময় আমজাদ হোসেন পক্ষের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা জাভেদ মাসুদ মিল্টনের অফিসে হামলা চালায়। অবস্থা বেগতিক দেখে মিল্টন গ্রুপের সমর্থকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গাংনী বাজার জুড়ে। ব্যাবসায়িরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশের একটি টিম ও সেনাবাহিনীর কয়েকটি টহল গাড়ী ঘটনাস্থলে আসলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে আবারও হামলা-পাল্টা হামলা শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

 

চলমান এই ঘটনায় মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা দুপুর ৩টার দিকে গাংনী বাজারে অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়েল সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।

 

 

এসময় বক্তারা বলেন, মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন দলীয় ভাবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এক পক্ষ সেটি মেনে নিতে পারছে না। তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে জালাও পোড়াও রাজনৈতি বেছে নিয়েছে। বিএনপির অফিস তারা ভাংচুর করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করার দায়ে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে শাস্থির দাবি জানান তারা।

 

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, গাংনী শহর জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

 

 

মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, অনেক নেতাকর্মী আমার সাথে দেখা করতে আসছে। অফিসের জায়গা স্বল্পতার কারণে আমি নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাশের একটি স্কুলে গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময়ের জন্য বের হয়েছিলাম। কিন্তু এই ভাবে অতর্কিত ভাবে যে হামলা হবে সেটি আমরা কামনা করি নি। এটি নেক্কারজনক। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকেই অনেকে মানতে চাইছে না। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

 

এ বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, সংঘর্ষের যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। বিষয়টি আমি পরে শুনেছি। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

 

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিএনপির মহাসচিব মেহেরপুরের দুটি আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর পর সোমবার সন্ধ্যা থেকেই মেহেরপুর-২ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য বিক্ষোভ মিছিল বের করে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা। পরে সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এ ঘটনার পর থেকে শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা সরকার গঠন করলে বিএনপির দুর্নীতির বিচার করব: নাসীরুদ্দীন

মেহেরপুর-২ আসনে মনোনয়ন দ্বন্দে বিএনপির দুপক্ষের হামলা, পাল্টা হামলা, ভাংচুর; আহত বেশ কয়েকজন

আপডেট সময় ০৮:৩০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

 

মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা এবং ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাংনী বাজারে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন ও জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা।

 

 

এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয় অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ও বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পিরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গাংনী বাজার জুড়ে রয়েছে আতঙ্ক।

 

মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা বলেন, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপি মোননিত প্রার্থী আমজাদ হোসেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাস স্ট্যান্ড দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় মনোনয়ন বঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষের সমর্থকরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে আমজাদ হোসেনে তার কার্যালয়ে অবস্থান নিলে জাভেদ মাসুদ মিল্টন গ্রুপের সমর্থকরা গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামালা চালিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থাকা অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

 

 

এদিকে হামলার খবর পেয়ে হাসপাতাল বাজার থেকে গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে আমজাদ হোসেন পক্ষের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে গাংনী বাস স্ট্যান্ডে চক্তরে আসে। এসময় আমজাদ হোসেন পক্ষের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা জাভেদ মাসুদ মিল্টনের অফিসে হামলা চালায়। অবস্থা বেগতিক দেখে মিল্টন গ্রুপের সমর্থকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গাংনী বাজার জুড়ে। ব্যাবসায়িরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশের একটি টিম ও সেনাবাহিনীর কয়েকটি টহল গাড়ী ঘটনাস্থলে আসলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে আবারও হামলা-পাল্টা হামলা শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

 

চলমান এই ঘটনায় মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের সমর্থকরা দুপুর ৩টার দিকে গাংনী বাজারে অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়েল সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।

 

 

এসময় বক্তারা বলেন, মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন দলীয় ভাবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এক পক্ষ সেটি মেনে নিতে পারছে না। তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে জালাও পোড়াও রাজনৈতি বেছে নিয়েছে। বিএনপির অফিস তারা ভাংচুর করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করার দায়ে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে শাস্থির দাবি জানান তারা।

 

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, গাংনী শহর জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

 

 

মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, অনেক নেতাকর্মী আমার সাথে দেখা করতে আসছে। অফিসের জায়গা স্বল্পতার কারণে আমি নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাশের একটি স্কুলে গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময়ের জন্য বের হয়েছিলাম। কিন্তু এই ভাবে অতর্কিত ভাবে যে হামলা হবে সেটি আমরা কামনা করি নি। এটি নেক্কারজনক। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকেই অনেকে মানতে চাইছে না। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

 

এ বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, সংঘর্ষের যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। বিষয়টি আমি পরে শুনেছি। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

 

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিএনপির মহাসচিব মেহেরপুরের দুটি আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর পর সোমবার সন্ধ্যা থেকেই মেহেরপুর-২ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য বিক্ষোভ মিছিল বের করে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা। পরে সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এ ঘটনার পর থেকে শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।